ডালু ও মৌসম
আগামী লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস কি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করবে?
এই প্রশ্ন নিয়ে এখন কংগ্রেসের অন্দরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কিছু দিন আগে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে বরকত গনি খান চৌধুরীর ভাই, প্রবীণ সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ওরফে ডালু অনুরোধ জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গেই আমাদের আসন সমঝোতা করা ভাল। তা হলে কংগ্রেস জিতবে। না হলে জেতা আসনগুলিও কংগ্রেস হারাবে। তিনি একা নন, একই মত মৌসম বেনজির নুরেরও। এঁরা বলছেন, ‘‘আমরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চাই না। কিন্তু বিজেপিকে জাতীয় স্তরে সরাতে গেলে কংগ্রেসের মমতাকে প্রয়োজন বলে মনে করছি।’’
এ দিকে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান দুজনেই মনে করছেন, রাজ্যে মমতার সঙ্গে জোট করার অর্থ বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া। আব্দুল মান্নান চিঠি দিয়ে রাহুল গাঁধীকে সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘রাজ্যে দু’টি পরিসর। মমতার পক্ষে অন্যটি মমতা-বিরোধী। কংগ্রেস মমতার সঙ্গে থাকলে এই বিরোধী পরিসরটাকে পুরোপুরি পেয়ে যাবে বিজেপি। বিজেপিকে এই সুযোগ আমরা দেব কেন?’’
এ রকম এক বিতর্কের পটভূমিতে রাহুল আগামিকাল রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। প্ৰায় ৪০ জন রাজ্য নেতাকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে| এত জনের সামনে রাহুল কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন এবং তা ঘোষণা করে দেবেন, এমনটা কেউ মনে করছেন না। তবে আগামিকাল সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিরুদ্ধে বলবেন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতার বক্তব্য, কংগ্রেস তৃণমূল এর সঙ্গে সমঝোতা না করলে সিপিএম এর সঙ্গে যে সমঝোতা হবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? কারণ সীতারাম ইয়েচুরি চাইলেও সিপিএম কি রাজ্যে সমঝোতা করতে রাজি? পলিটব্যুরোয় যদি এখনও কারাট-এর প্রভাব বেশি থাকে, তা হলে কি সিপিএম রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ায় যেতে রাজি হবে?
কিছু দিন আগে রাজ্য কংগ্রেসের নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের যাওয়া অনুচিত। কারণ মমতা নিজেই তো কংগ্রেস ভাঙছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি জোট করতে রাজি, এটা তো তিনি নিজেও বলছেন না। তৃণমূলের সঙ্গে জোট না করলে আবু হাসেম খান চৌধুরী এবং মৌসম যে মমতা শিবিরেই চলে যেতে পারেন, সে আশঙ্কা আছে। অবশ্য দু’জনের কেউই মুখে এটা মানতে রাজি নন। তৃণমূলেরও মুখে কুলুপ।