ছিল ৮৮ হাজার, হল ২.১০ লক্ষ। এক ধাক্কায় দিল্লির বিধায়কদের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ভাতা আড়াই গুণেরও বেশি বাড়ানোর সুপারিশ করা হল। বাড়ছে অন্য সুযোগ-সুবিধেও। আম আদমি পার্টি তথা মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল সরকারের এই প্রস্তাব আপাতত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবেচনাধীন। বিরোধী বিজেপির মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্রের শ্লেষ, ‘‘সত্যি, আম আদমিই বটে!’’
এই হারে বেতন বৃদ্ধির কারণ?
এক আপ বিধায়কের যুক্তি— টাকার অভাবে তিনি বিয়ে বাড়ির নিমন্ত্রণ এড়িয়ে চলছেন। কারণ বিয়ে বাড়ি গেলে উপহার নিয়ে যেতে হয়। আরও এক ধাপ এগিয়ে আপ বিধায়ক প্রবীণ কুমারের কথায়, ‘‘উপহার তো দূর। যারা দেখা করতে আসছেন, তাঁদের চা দিয়ে আপ্যায়নটুকুও করতে পারছি না। তাই বেতন বৃদ্ধি খুব দরকার ছিল।’’ বিধায়কদের উপরোধেই একটি কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল।
সেই কমিটি নিজেদের সুপারিশে এক ধাক্কায় বিধায়কদের বেতন ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিধানসভা এলাকার ভাতাও ১৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা। সঙ্গে পরিবহণ ভাতা ৩০ হাজার, ফোন ও যোগাযোগের জন্য ১০ হাজার টাকা। আর সহকারী রাখা ও অতিথি আপ্যায়নের জন্য আরও ৭০ হাজার নিয়ে মাসে মোট ২.১০ লক্ষ টাকা। কমিটি মন্ত্রীদের বেতনও ২০ হাজার টাকা থেকে এক লাফে বাড়িয়ে ৮০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে।
বেতনের পাশাপাশি মন্ত্রী-বিধায়কদের বাৎসরিক সফর ভাতা ছয়গুণ বাড়িয়ে তিন লক্ষ টাকা করারও সুপারিশ করা হয়েছে। এত দিন দিল্লির বিধায়কেরা কেবল দেশের মধ্যে সফরে গেলে এই ভাতা পেতেন। এখন থেকে বিদেশ সফরেও এই ভাতা পাবেন আপ বিধায়কেরা। চাইলে পরিবারের লোকেদেরও বিদেশ ভ্রমণে নিয়ে যেতে পারবেন তাঁরা।
স্বচ্ছ রাজনীতি, সুশাসন ও দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসনের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন কেজরীবাল। ক্ষমতায় আসার আগে একটা সময়ে সাংসদদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে আপ নেতারাই সরব হতেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসতেই উল্টো সিদ্ধান্ত। উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার বক্তব্য, ‘‘বিধায়েকরা নয়, একটি স্বাধীন কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা ছাড়া জনগণের সেবা করতে গেলে টাকার প্রয়োজন হয়। বিধায়কদের যে টাকার দরকার রয়েছে, সেটা অস্বীকার করা চলে না।’’ কিন্তু যে কমিটি বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই কমিটিও তো কেজরীবাল সরকারেরই ঠিক করে দেওয়া! তা হলে? এই প্রশ্ন উঠতেই অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন সিসৌদিয়া।