গণবিবাহের আসর। —নিজস্ব চিত্র।
দরিদ্র পরিবারে যেখানে চারটে মানুষকে ডেকে খাওয়ানোও সমস্যা, সেখানে বিয়েতে খোদ মন্ত্রী-জেলাশাসককে নিমন্ত্রণ করার প্রশ্নই নেই। পাত পেড়ে শয়ে শয়ে মানুষকে খাওয়ানোর কথা স্বপ্নেও ভাবা যায় না। অথচ সেই সব স্বপ্নই সফল হল শুক্রবারের গোধূলি লগ্নে। দশ জোড়া হাত এক হওয়ার শুভক্ষণে কন্যাপক্ষের তরফে বরেদের মাথায় ফুট ছিটিয়ে মণ্ডপে স্বাগত জানালেন মন্ত্রী। আর বরপক্ষের হয়ে ভার সামলালেন খোদ জেলাশাসক!
অসম সরকার ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে চালালেও অসমের বিভিন্ন জেলায় এখনও দরিদ্র পরিবারগুলির একমাত্র চিন্তা মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো নয়, কোনওমতে বিয়ে করে বিদায় দেওয়া! জেলাশাসক হিসেবে সেই অভিজ্ঞতা বারবার হয়েছে আইএএস অফিসার বর্ণালী ডেকার। প্রাক্তন আইপিএস, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বর্ণালী এখন নলবাড়ি জেলার জেলাশাসক। কন্যাসন্তানদের গুরুত্ব বোঝাতে তিনি ঘোষণা করেছেন, মেয়েরা শুধু পরিবার নয়, জেলা প্রশাসনের পরিবারেরও অংশ। শুক্রবার নলবাড়িতে সরকারি উদ্যোগেই ‘শুভ পরিণয়’ নামে গণ-বিবাহ কর্মসূচির আয়োজন হয়েছিল। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের অধীনে এই কর্মসূচিতে মন্ত্রী-বিধায়করা তো বটেই গ্রামের মানুষও যে যেমন পেরেছেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
১০ জোড়া বর-কনের বিবাহ অনুষ্ঠান বসে শ্রী শ্রী হরিমন্দিরে। বরেরা বরযাত্রী-সহ সার্কিট হাউস থেকে হরিমন্দিরে পৌঁছন। অভ্যর্থনা জানাতে কন্যাপক্ষে হাজির ছিলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া। কনেদের বরণ করেন জেলাশাসক বর্ণালী। কখনও কন্যা সম্প্রদানের ভার হাতে তুলে নেন মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল। বর্ণালীর ঘোষণা, প্রতি বছর বসবে গণ বিবাহের আসর। আগ্রহীরা আবেদন জানাতে পারেন। বিয়ের পরে কনেদের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য করে রোজগারের উপায় করে দেওয়া হবে।