সোমবারের বিস্ফোরণে দশ ফুটের মতো গর্ত হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত।
নিরাপত্তাবাহিনীর উপর হামলা চালাতে ‘ফক্সহোল’ কৌশল ব্যবহার করেছিলেন মাওবাদীরা। এই প্রথম নয়, এর আগেও এই কৌশল ব্যবহার করে নিরাপত্তাবাহিনীকে নিশানা করেছেন তাঁরা। সোমবার সেই একই কায়দায় হামলা চালানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
গত কয়েক দিন ধরেই চার জেলায় মাওবাদী দমন অভিযান চালাচ্ছিল ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং পুলিশ। যে সব জায়গায় অভিযান চলছে তার মধ্যে রয়েছে নারায়ণপুর, দন্তেওয়াড়া, কোন্ডাগাঁও এবং জগদলপুর। রবিবার দন্তেওয়াড়া এবং নারায়ণপুর জেলার সীমানায় অবুঝমাড়ের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের রাতভর গুলির লড়াই চলে। সেই সংঘর্ষে চার মাওবাদীর মৃত্যু হয়। মৃত্যু হয় ডিআরজি-র এক হেড কনস্টেবলের। সেই সংঘর্ষের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বড় হামলা চালান মাওবাদীরা।
অভিযান সেরে সোমবার দুপুরে বেস ক্যাম্পে ফিরছিল ডিআরজি এবং পুলিশের একটি দল। বিজাপুরের বেদরে-কটরু রোডে সেই দলের উপর হামলা চালানো হয়। অম্বেলি গ্রামের কাছে রাস্তায় পুঁতে রাখা আই়়ইডি বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। সেই বিস্ফোরণে বাহিনীর ন’জনের মৃত্যু হয়। ২০ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে বাহিনীর গাড়ি। কয়েক টুকরো হয়ে যায় সেই গাড়ি। শুধু তা-ই নয়, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ১০ ফুটের বেশি গর্ত তৈরি হয়ে গিয়েছিল রাস্তায়। আর হামলার এই ধরন দেখেই পুলিশের সন্দেহ, আবার ‘ফক্সহোল’ কৌশলে হামলা শুরু করেছেন মাওবাদীরা।
২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল দন্তেওয়াড়ায় যে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন মাওবাদীরা, সেই হামলার সঙ্গে সোমবারের হামলার হুবহু মিল রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, ১৫ দিন ধরে হামলার ছক কষেছিলেন মাওবাদীরা। সোমবার বাহিনীর ন’টি গাড়ির কনভয় অভিযান সেরে ফেরার পথে হামলার মুখে পড়ে।
কী এই ‘ফক্সহোল’ কৌশল?
নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে খবর, এই কৌশলে হামলা চালানোর জন্য প্রথমে রাস্তার মাঝে বড় গর্ত খোঁড়া হয়। তার পর সেই গর্তের মধ্যে বিস্ফোরক রাখা হয়। তার উপর পাথর চাপা দেওয়া হয়। তার পর গাছের পাতা দিয়ে এমন ভাবে ঢেকে দেওয়া হয়, যা সহজে বোঝা যায় না। শুধু তা-ই নয়, মাইন চিহ্নিতকরণ যন্ত্রও তা ধরতে পারে না।