PFI

বন্ধ সমাজমাধ্যম, তুরস্কেও কি যোগ পিএফআইয়ের

গত কাল কেন্দ্রের গেজ়েট বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামিক স্টেট ও জেএমবির মতো বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে পিএফআইয়ের যোগাযোগের কথা বলা হয়েছিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০৮
Share:

তুরস্কের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে পিএফআইয়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথা দাবি করা হল নানা মহলে। ফাইল চিত্র।

নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) এবং তার নেতাদের যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিল সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। যদিও তার আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ধরপাকড় চলাকালীন পিএফআইয়ের করা টুইট রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রককে ট্যাগ করার অভিযোগ উঠল কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের পাক কনসুলেটের বিরুদ্ধে। সিরিয়ায় আল কায়দাকে অস্ত্র সরবরাহে অভিযুক্ত তুরস্কের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে পিএফআইয়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথাও দাবি করা হল নানা মহলে।

Advertisement

সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ঘটনাবহুল। টুইটারে পিএফআইয়ের অ্যাকাউন্টটির প্রায় আশি হাজার ফলোয়ার ছিল। আজ দেখা যায়, সেই অ্যাকাউন্ট তুলে নিয়েছে টুইটার। সেখানে এক লাইনের বার্তায় লেখা আছে, ‘আইনি প্রয়োজনীয়তার স্বার্থে এই অ্যাকাউন্ট প্রত্যাহার করা হল’। সংগঠনের চেয়ারপার্সন ও এম এ সালাম এবং সাধারণ সম্পাদক আনিস আহমেদের টুইটার অ্যাকাউন্টও মুছে দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামও পিএফআইয়ের অ্যাকাউন্ট তুলে নিয়েছে।

বন্ধ হওয়ার আগে পিএফআইয়ের সেই টুইটার পেজেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী আচরণ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ভ্যাঙ্কুভারে পাকিস্তানের কনসুলেট জেনারেলের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পিএফআইয়ের সেই টুইটকে পাক বিদেশ মন্ত্রক-সহ বেশ কিছু টুইটার হ্যান্ডলে ট্যাগ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন, ইউরোপীয় কমিশন, জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের দফতরের টুইটার হ্যান্ডল। রয়েছে ‘কাশ্মীর’ হ্যাশট্যাগও। যদিও পাক দূতাবাসের সেই টুইট পরে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ যে ভুল ছিল না, ওই ‘টুইটেই’ তা স্পষ্ট।

Advertisement

গত কাল কেন্দ্রের গেজ়েট বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামিক স্টেট ও জেএমবির মতো বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে পিএফআইয়ের যোগাযোগের কথা বলা হয়েছিল। এ বার ‘নর্ডিক মনিটর’ নামে সুইডেনের স্টকহলমের একটি গোয়েন্দা প্ল্যাটফর্মের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে আল কায়দা-যোগে অভিযুক্ত তুরস্কের একটি সংগঠনের সঙ্গে পিএফআইয়ের ঘনিষ্ঠতার কথা। ‘নর্ডিক মনিটর’ বলেছে, ‘ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস অ্যান্ড হিউম্যানিটেরিয়ান রিলিফ’ (আইএইচএইচ) নামে তুরস্কের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অতিথি হয়ে পিএফআইয়ের জাতীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ই এম আব্দুল রহমান এবং পি কোয়া ইস্তানবুলে গিয়েছিলেন। প্ল্যাটফর্মটির দাবি, আইএইচএইচের সঙ্গে আল কায়দার যোগ রয়েছে। ২০১৪ সালে সিরিয়ায় জঙ্গিদের অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, তুরস্কের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কাজ করে আইএইচএইচ। আরও অভিযোগ, ২০১৬ সালে তুরস্কে যখন সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়, তখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ানের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছিল পিএফআই। আবার ‘পিএফআইয়ের উপরে ভারতীয় পুলিশের নির্যাতন’-এর অভিযোগ তোলা হয়েছিল তুরস্কের সরকারি সংবাদমাধ্যমেই।

কেরলের বাম জোট সরকারের শরিক নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে পিএফআইয়ের যোগ রয়েছে বলে গত কাল দাবি করেছিল বিজেপি। আজ যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী পিএফআইয়ের আর্থিক-সহ যাবতীয় কার্যকলাপ বন্ধে সমস্ত জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে কেরল সরকার। কড়া পদক্ষেপ করেছে কেরল হাই কোর্টও। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অভিযানের বিরুদ্ধে গত ২৩ সেপ্টেম্বর পিএফআইয়ের ডাকা হরতালে অন্তত সরকারি ৫৮টি বাস ভাঙচুর করেছিলেন প্রতিবাদীরা। অনেকে আহত হয়েছিলেন, স্তব্ধ হয়েছিল পরিবহণ। আজ হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, পিএফআইকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫.২০ কোটি টাকা কেরলের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র)-এর কাছে জমা করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement