ছবি: সংগৃহীত।
গ্রামের গরিব মানুষের হাতে টাকা নেই বলে তাঁরা কেনাকাটা করছেন না। তাই বাজারে চাহিদা নেই। নতুন লগ্নি টানতে বাজারে চাহিদা বাড়াতে হবে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেছেন, গ্রামের মানুষের হাতে টাকা জোগাতে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) বাড়াতে হবে।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা রবি ফসলের জন্য সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, গত মরসুমের তুলনায় এ বার ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সহায়ক মূল্য সেই তুলনায় বাড়েনি, সরকার ফসলও কিনছে না। ফলে এমএসপি বাড়িয়ে লাভ কী!
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের দাবি, চাষিদের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যেই সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। প্রধান রবি ফসল গমের দাম আগের মরসুমের তুলনায় কুইন্টাল প্রতি ৮৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। যা প্রায় ৪.৬ শতাংশ বৃদ্ধি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা একে বিপুল বৃদ্ধি বলে দাবি করেছেন। যদিও কৃষি মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্ট অ্যান্ড প্রাইসেস (সিএসিপি)-এর হিসেবে গত মরসুমের তুলনায় গমের উৎপাদন খরচ ৬.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। অথচ গমের এমএসপি বেড়েছে তার তুলনায় কম হারে।
মোদী সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে গিয়েই সহায়ক মূল্য বাড়ায়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন অভিজিৎ। সহায়ক মূল্য না-বাড়ানোয় চাষিরা সঙ্কটে পড়েছেন। কৃষক সংগঠনগুলির দাবি ছিল, স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে চাষের খরচের চেয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি সহায়ক মূল্য ঘোষণা করতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আজ দাবি করেছেন, গমের পাশাপাশি, সর্ষে, বার্লি, ডাল, রেপসিডের মতো রবি ফসলে এই মরসুমে চাষের খরচের তুলনায় ৫০ থেকে ১০৯ শতাংশ পর্যন্ত সহায়ক মূল্য দেওয়া হচ্ছে।
কৃষক সভার নেতা হান্নার মোল্লার অভিযোগ, সিএসিপি চাষের খরচের হিসেব করার পর থেকে কখনওই দেড় গুণ ফসলের দাম দেওয়া হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গম, চাল ছাড়া আর কোনও ফসল তো সরকার কিনছেই না। তা হলে সরকারি মূল্য ঘোষণা করেই বা কী লাভ হবে? চাষিরা তো সেই দাম পাবেন না!’’ সরকারের যুক্তি, সহায়ক মূল্যের তুলনায় কোনও ফসলের দাম পড়ে গেলে চাষিকে সাহায্য করতে ‘পিএম-আশা’ প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে। তার ‘পাইলট প্রকল্প’ চালু রয়েছে।