গত কাল বিকেলে ভোপালের আরিরা হিলসে মধ্যপ্রদেশের সরকারের মন্ত্রালয় সাতপুরা ভবনে আগুন লাগে। পিটিআই।
মন্ত্রালয়ের আগুন নিভলেও বটে, জ্বলে উঠল রাজনৈতিক টানাপড়েনের আগুন। গত কাল বিকেলে ভোপালের আরিরা হিলসে মধ্যপ্রদেশের সরকারের মন্ত্রালয় সাতপুরা ভবনে আগুন লাগে। রাতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কংগ্রেসের তরফে সমাজমাধ্যমে অগ্নিদগ্ধ ভবনের ছবি দিয়ে বলা হয়, সরকারি ফাইল পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও ভোটমুখী রাজ্যে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে বিজেপি সরকার।
কংগ্রেসের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ওই আগুন লাগানো হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এর সঙ্গে দুর্নীতির অনুষঙ্গ তুলে ধরেছেন। তাঁর অভিযোগ, “আগুন কি লেগেছিল, নাকি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল? প্রায় ১২ হাজার ফাইল পুড়ে গিয়েছে। এর পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল?” এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। কমলের অভিযোগ, এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল না সরকার। শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকার পরিকাঠামো তৈরির পরিবর্তে শুধুমাত্র অর্থের পিছনে ছুটে চলেছে বলেও অভিযোগ কমলের।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র অবশ্য পাল্টা অভিযোগে জানান, কংগ্রেস সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরিবর্তে রাজনৈতিক সুবিধা কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর। ঘটনার সময়ে প্রায় চার হাজার কর্মী উপস্থিত ছিলেন। ফলে কেরোসিন কিংবা পেট্রল ঢেলে কেউ অগ্নিসংযোগ করলে তা কেউ না কেউ দেখতে পেতেন বলেও জানান। কংগ্রেসের অভিযোগের নিন্দাও করেছেন নরোত্তম। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত রকম চেষ্টা করেছেন এমনকি বায়ুসেনাও প্রস্তুত ছিল সহায়তায়।” যে সমস্ত নথি পুড়ে গিয়েছে, তার তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব বলেও জানান।
আগুন লাগার ঘটনায় একটি শীর্ষ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে।
গত কাল বিকেল ৪টে নাগাদ ওই ভবনের চার তলায় আগুন লাগে। দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সাত তলা পর্যন্ত। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, চার তলার এসি ইউনিটের শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত।
প্রসঙ্গত সাতপুরা ও বিন্ধ্যাচল এই দুই ভবনে মন্ত্রালয়ের কাজ হয়। ফলে প্রশাসনিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সাতপুরা ভবন। এমন জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়ায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। আসরে নামে ভোপালপুরসভার দমকল দফতর। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর পরে ভোপালের ভেল প্ল্যান্টের অগ্নিনির্বাপক দলের সহায়তা চায় জেলা প্রশাসন। আগুন নিয়ন্ত্রণে নামে বিমানবন্দর এবং পার্শ্ববর্তী শহরের পুলিশের অগ্নিনির্বাপক দলও। সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার উন্নত মানের হাইড্রলিক মই ব্যবহার করা হয়।সংবাদ সংস্থা