মনসুখ মাণ্ডবিয়া। ফাইল চিত্র।
কোভিড টিকাকরণের ফলে প্রায় ৩৪ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে আজ দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। যাঁদের একটি বড় অংশই ছিলেন প্রবীণ তথা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। একই সঙ্গে টিকাকরণ নীতি এ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলায় প্রায় ১৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি আটকানো সম্ভব হয়েছে, দাবি তাঁর।
আজ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডিয়া ডায়ালগ পর্বে দেশীয় অর্থনীতিতে টিকাকরণ-সহ অন্যান্য সরকারি সিদ্ধান্তের প্রভাব বিষয়ে বক্তব্য রাখেন মাণ্ডবিয়া। বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনাকে অতিমারি ঘোষণার আগেই ভারত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফায়দা পায় ভারত। মাণ্ডবিয়ার কথায়, ‘‘সরকার গোড়াতেই দেশ জুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এতে জনগণের মধ্যে এক দিকে ওই রোগ সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়ে। অন্য দিকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার সময় পাওয়া যায়।’’ কোভিড সংক্রমণ ও ধারাবাহিক লকডাউনেও জীবন-জীবিকার উপরে প্রভাব রুখতে সরকার সার্বিক নীতি নিয়ে এগিয়েছিল বলে দাবি মাণ্ডবিয়ার। তার মধ্যে অন্যতম টিকাকরণ।
তাঁর দাবি, লকডাউনের কারণে ঘরে-ঘরে যাতে খাদ্যশস্যের অভাব দেখা না যায় সে জন্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা হাতে নিয়েছিল সরকার। এর ফলে ৮০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে দীর্ঘ সময় ধরে খাদ্যশস্য পেয়ে এসেছেন। যে খাতে খরচ হয়েছিল, তা প্রায় ২৬০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। মাণ্ডবিয়ার দাবি, করোনা কালের পরে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্র ছোট-মাঝারি ও কুটির শিল্পগুলিকে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা অনুদান দেয়। এ ছাড়া সরকারের গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনার ফলে প্রায় ৪০ লক্ষ ব্যক্তির কাজের সুযোগ তৈরি হয়। অর্থনীতিতে যার ইতিবাচক প্রভাব ছিল ৪৮০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, দেশবাসী যখন টিকার অভাবে ভুগছেন তখন অন্য দেশকে টিকা দিয়ে সাহায্যের পথে এগিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তখন বিশ্ব টিকাগুরু উপাধি পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দেশে ঘটা করে টিকা উৎসব হলেও দেশবাসী টিকা পাননি।’’ তাঁর মতে, ‘‘আচমকা লকডাউনের নীতি পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল। মৃত্যুর হিসেব সরকারের কাছে নেই। অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব এখনও দেখা যাচ্ছে। বন্ধ হওয়া ছোট-মাঝারি কারখানা খোলেনি। মানুষের অবস্থা আরও শোচনীয়।’’ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, ‘‘কোভিড কালে নদীতে লাশ ভাসতে দেখেন দেশবাসী। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংগঠনের মতে ভারতে ৪৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসেবে জানানো হয়েছে সাড়ে চার লক্ষ মৃত্যুর কথা।’’