মনোজ জারঙ্গে পাটিল। ছবি: সংগৃহীত।
বিজেপির বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’-এর হুমকি দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন মনোজ জারঙ্গে পাটিল। মরাঠাদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের নেতা মনোজ গত কাল বলেছিলেন, তিনি মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে ২৫ জন প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। কিন্তু নির্বাচনী ময়দান থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে পাটিল বলেছেন, তিনি মরাঠা সম্প্রদায়কে কোনও বিশেষ দলের প্রার্থীকে হারানোর নির্দেশ দিতে চান না।
মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী মরাঠা সম্প্রদায়ের জন্য অনগ্রসর শ্রেণিতে সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন করে মনোজ কার্যত বিজেপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের বিজেপি-জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে নিশানা করেছিলেন। তাঁর নির্বাচনী ময়দান থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে উল্লসিত পদ্ম শিবির বলেছে, বিজেপির জন্য দেরিতে দীপাবলি শুরু হল।
উল্টো দিকে, কংগ্রেস, শরদ পওয়ারের এনসিপি ও উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার মহাবিকাশ আঘাড়ীর দাবি, এর ফলে তাঁদের লাভ হবে। কারণ মরাঠা ভোটের অধিকাংশই কংগ্রেস, শরদের এনসিপি-র ঝুলিতে যায়। লোকসভা নির্বাচনে মরাঠা ভোটের সুবাদে আঘাড়ী ভাল ফল করেছিল। শরদ দাবি, মরাঠা ভোট ভাগাভাগি বলে বিজেপি লাভবান হত। মনোজ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
চলতি মাসের ২০ তারিখ মহারাষ্ট্রে এক দফায় বিধানসভা নির্বাচন। মহারাষ্ট্রে মরাঠারাই প্রভাবশালী ও জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ হলেও গত কয়েক বছর ধরে মরাঠাদের সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের প্রধান কারণ, মরাঠারা মনে করছে ওবিসি-দের ভাগ জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। তা ছাড়া, বর্ধিষ্ণু মরাঠাদের পাশাপাশি, গরিব, কৃষক, পশুপালক মরাঠাও রয়েছেন। যাঁরা কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না। প্রথমে কংগ্রেস-এনসিপি সরকার মরাঠা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলেও বম্বে হাই কোর্টের নির্দেশে তা খারিজ হয়ে যায়। এর পরে ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সামাজিক ও আর্থিক অনগ্রসরদের জন্য বাড়তি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলেও সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দেয়। তারপর থেকেই মরাঠা আন্দোলনের ক্ষোভের মুখ ফডণবীস তথা বিজেপির দিকে ঘুরে যায়।