গণ-হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত স্কুলে মনোবিদরা

স্কুলে নাকি বাসা বেঁধেছে ভূতের দল! প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের ঘাড়ে চাপছে। কেউ আচমকা মুর্ছা যাচ্ছে, কেউ আবার পাগলের প্রলাপ বকছে। তাও বাংলায় নয়, মণিপুরিতে। অতএব মণিপুরি ভূত।

Advertisement

উত্তম সাহা

শিলচর শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১২
Share:

স্কুলে নাকি বাসা বেঁধেছে ভূতের দল! প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের ঘাড়ে চাপছে। কেউ আচমকা মুর্ছা যাচ্ছে, কেউ আবার পাগলের প্রলাপ বকছে। তাও বাংলায় নয়, মণিপুরিতে। অতএব মণিপুরি ভূত।

Advertisement

এমনই নচ্ছার ভূত যে প্রথম দিকে স্কুলেরই এক শিক্ষককে একটু-আধটু ভয় পেত। কিন্তু দু-দিনের মধ্যেই তাঁর ঝাড়ফুঁকও ভূতের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ভূতের ভয়ে মিলাদ মহফিলের আয়োজন হল স্কুলে। হল সিরনি (প্রসাদ) বিতরণ। পীর ডেকে এনে ক্লাশে ক্লাশে ঝাড়ফুঁক করালেন শিক্ষকরা। তার পরও আজ এক ছাত্রী মুর্ছা যাওয়ায় ভূতেরা ঠিক পালিয়েছে কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না তাঁরা!

উপায়ান্তর না দেখে জেলাশাসককে বিষয়টি জানান স্বাধীনবাজার হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক জয়নাল আবেদিন বড়ভুইয়া। আর এরপরেই কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন স্কুলে আরও বড় ‘ওঝা’ পাঠাচ্ছেন। তাঁকে সোজাসুজি জানিয়ে দিয়েছেন, ভূত বলে কিছু নেই। কালই মেডিক্যাল টিম পাঠাচ্ছেন তিনি। গণ-হিস্টিরিয়ার মোকাবিলায় পাঠাচ্ছেন মনোবিদদের একটি দল।

Advertisement

স্বাধীনবাজারের এই ভূতের গল্প জেলায় ছড়িয়ে পড়লেও চিকিৎসকরা জানান, এটা গণ-হিস্টিরিয়া। স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা সুদীপজ্যোতি দাসের কথায়, এটা এক ধরনের মনেরই রোগ। চিকিৎসাতেই সেরে যাবে। মনোরোগের চিকিৎসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ভূত-প্রেত বা কুসংস্কারে বিশ্বাসীদের এমনটা হয়। প্রথম ঘটনাটি নানা শারীরিক সমস্যার দরুন হতে পারে। তার পরই অন্যদের মনে ভূতে ধরার ভাবনা বাসা বাঁধে। সেখান থেকেই একে একে অনেকে আক্রান্ত হন। ওষুধের বদলে তাঁর পরামর্শ, ‘‘এ সব ক্ষেত্রে প্রথমে জোট বেঁধে থাকাটা ভাঙতে হয়। পরিবেশ বদলেও ফল মেলে।’’ স্কুলে তাই কিছু দিন ছুটিও দেন তিনি।

বছর ছয়েক আগে একই ঘটনা ঘটেছিল শিলচর শহরের ওরিয়েন্টাল হাই স্কুলে। সে সময় এক মাসের জন্য স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে নতুন করে আর কোনও ঘটনা ঘটেনি। প্রসেনজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘এ বারও তেমনটাই করা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement