মণিপুর বিধানসভা। ছবি: সংগৃহীত।
গোষ্ঠী সংঘর্ষে মে মাস থেকেই উত্তাল মণিপুর। সেনা নামিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। এমনকি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর সফরে গেলেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। এই অবস্থায় এক দিনের জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য রাজ্যপালের কাছে সুপারিশ জানাল মণিপুর মন্ত্রিসভা। রাজ্যপাল সম্মতি দিলে আগামী ২১ অগস্ট ওই অধিবেশন হতে পারে।
সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ফোনে কথা হয়। তার পর তড়িঘড়ি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে বিধানসভার এক দিনের অধিবেশন ডাকার জন্য রাজভবনে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
এর আগে মণিপুরে বিধানসভা অধিবেশন বসেছিল গত মার্চ মাসে। তার পর মে মাস থেকে উত্তপ্ত সে রাজ্য। সংবিধান অনুযায়ী সব রাজ্যের বিধানসভাতেই বাদল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু হিংসার কারণে মণিপুরে তা আটকে ছিল। গত ২৬ জুলাই বিরোধীদের চাপে পড়ে সে রাজ্যের সরকার এ মাসের শুরুতেই অধিবেশনের আহ্বান জানায়। এর পরই আজ এক দিনের অধিবেশন করার সুপারিশ করল ক্যাবিনেট। যদিও প্রস্তাবিত বিধানসভা অধিবেশনের কাজকর্মের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ওই অধিবেশনে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার সুবিধার্থে, মণিপুর সরকার শুক্রবার সকাল ৫টা থেকে দুপুর ১২টা— সাত ঘণ্টার জন্য পূর্ব ইম্ফল ও পশ্চিমের কিছু জেলায় কার্ফু শিথিল করেছিল। ওষুধ এবং খাদ্যসামগ্রী-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলি যাতে জনসাধারণ সংগ্রহ করেতে পারে তার জন্য এই সিদ্ধান্ত।
গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। তার পর থেকে তিন মাস কেটে গেলেও এখনও সেই হিংসায় লাগাম পরানো যায়নি। এই হিংসায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তিন মাসে সে রাজ্য থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ৩০ জন ব্যক্তি। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালানো হলেও এখনও পর্যন্ত কারও সন্ধান পাওয়া যায়নি।