ওক্রাম ইবোবি সিংহ
অসমের পাশাপাশি এ বার নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী না মানার কথা তুলল মণিপুরও।
সংশোধনীতে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। তাতে আপত্তি তুলেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ ও সে রাজ্যের বিভিন্ন দলের নেতারা। অসমে ছাত্র সংগঠন আসু ঘোষণা করেছে— নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের জেরে অসমকে অতিরিক্ত শরণার্থীর ভার নিতে হলে ফের আন্দোলন শুরু হবে।
মণিপুরে বহিরাগতদের বহিষ্কার করার জন্য আন্দোলন চলছে। সেই সঙ্গে ভূমিপুত্রদের স্বার্থরক্ষায় বিল ও ইনারলাইন পারমিট চালু করার দাবিতেও নিয়মিত চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। এই অবস্থায় কেন্দ্র নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী এনে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে বলে ইবোবি সিংহের আশঙ্কা। তাঁর বক্তব্য, বাংলাদেশ থেকে অসম হয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশ ঘটে। সেই সঙ্গে মায়ানমার থেকেও অনেকে মণিপুরে ঢুকে পড়েন। ইবোবির কথায়, ‘‘কেন্দ্র অন্য রাজ্যগুলির কথা মাথায় রেখে আইনে সংশোধনী আনলেও উত্তর-পূর্বে ওই আইনের বিরূপ প্রভাব পড়বে। শীঘ্রই রাজ্যের তরফে সরকারি ভাবে এ নিয়ে আপত্তির কথা কেন্দ্রকে জানানো হবে।’’
এ দিকে পাশের রাজ্য অসমের বিজেপি জোট সরকার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত না পারছে গিলতে, না পারছে ফেলতে। কেন্দ্রের কথা মানতে এক দিক থেকে বাধ্য সর্বানন্দ সোনোয়াল। অন্য দিকে ভূমিপুত্রদের স্বার্থরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গড়ার পরে এখন ১৯৭১ সালের পরে আসা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দিলে রাজ্যজুড়ে জনরোষের মুখে পড়তে হবে সরকারকে। ইতিমধ্যেই শাসক জোটের শরিক অসম গণ পরিষদ জানিয়ে দিয়েছে, তারা সংশোধনীর বিপক্ষে। আসুর অসম আন্দোলনের শেষে বর্তমান অগপ নেতাদের আমলেই অসম চুক্তি হয়। যেখানে বলা আছে— ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর আর কোনও বহিরাগত শরণার্থীকে অসমে থাকতে দেওয়া হবে না। অগপ বিজেপিকে ওই চুক্তির শর্ত মেনে চলতে বলে। সংশোধনীর বিরুদ্ধে আন্দোলনে একজোট আসু-সহ ২৮টি সংগঠনও।
যৌথ মঞ্চ জানিয়েছে, সংশোধনীর প্রতিবাদে আগামী কাল সব জেলা ও মহকুমা সদর থেকে মিছিল বের করা হবে। ২২ অক্টোবর গুয়াহাটিতে হবে জনসভা। আসু জানায়, মানুষের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে আইন সংশোধন করলে ফের অসম আন্দোলের মতোই আন্দোলন শুরু হবে রাজ্যে। আন্দোলনের মুখে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনায়োল জানান, হিন্দু বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে ভূমিপুত্রদের মতামতকে অবশ্যই শ্রদ্ধা জানানো হবে। ভূমিপুত্র অসমীয়াদের স্বার্থরক্ষায় রাজ্য সরকার দায়বদ্ধ।