Manipur Unrest

বর্ষশেষে ক্ষমাপ্রার্থী এক মুখ্যমন্ত্রী, তবে শেষ দিনটাও ভাল কাটল না

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে গোষ্ঠী হিংসায় উত্তাল মণিপুর। এ পর্যন্ত কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন আরও অনেকে। সম্প্রতি পরিস্থিতি সামান্য নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও শান্তি ফেরেনি মণিপুরে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:১৩
Share:

অশান্ত মণিপুর। ছবি: পিটিআই।

বছরশেষের দিনে রাজ্যবাসীর কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘যা হয়েছে ভুলে যান!’ আশ্বাস দিলেন, পরের বছর থেকেই শান্তি ফিরবে রাজ্যে। তিনি ফেরাবেন! যদিও এই আশ্বাসের দিনেও শান্তি ফিরল না। বরং অশান্তির জেরে কার্ফু ঘোষণা হল এক জেলায়।

Advertisement

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে গোষ্ঠী হিংসায় উত্তাল মণিপুর। এ পর্যন্ত কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন আরও অনেকে। সম্প্রতি পরিস্থিতি সামান্য নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও অশান্ত মণিপুর। সেই আবহেই এ বার রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। মঙ্গলবার ইম্ফলে একটি সাংবাদিক বৈঠকে বীরেন বলেন, ‘‘এই পুরো বছরটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ছিল। গত বছরের ৩ মে থেকে আজ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে, তার জন্য আমি রাজ্যের জনগণের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। বহু মানুষ প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। অনেককে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু গত তিন-চার মাসের পরিস্থিতি দেখার পর আমার বিশ্বাস, ২০২৫ সালে রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরবে।’’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাহাড়ি এবং উপত্যকার জেলাগুলির সীমানায় নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করেছে কেন্দ্র, এর ফলে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে গুলি চলার ঘটনাও কমেছে। পশ্চিম ইম্ফল, পূর্ব ইম্ফল, কংপোকপি ও চুরাচাঁদপুর জেলা মিলিয়ে দু’হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত পরিবারকে নিজেদের ভিটেয় পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ২ ও ৩৭ নং জাতীয় সড়কের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে যথাক্রমে ১৭ এবং ১৮ কোম্পানি অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও, গত কয়েক মাসে গোটা রাজ্য জুড়ে ছ’হাজারেরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় সব মিলিয়ে ১২,২৪৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৬২৫ জন। এর পরেই বীরেনের আশ্বাস, মণিপুরে শান্তি ফেরানোর সব রকম চেষ্টা করছে রাজ্য। মণিপুর প্রশ্নে স্থায়ী সমাধান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। বীরেন বলেন, ‘‘যা হয়েছে ভুলে যান। আসুন অতীত ভুলে নতুন করে শান্তি ও সমৃদ্ধিময় জীবন শুরু করি!’’ তবে বছর শেষের দিনেও একই রকম অশান্ত মণিপুর। মঙ্গলবারই নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয়দের একপ্রস্ত সংঘর্ষের পর কার্ফু জারি হয়েছে কংপোকপি জেলার সাইকুলে।

Advertisement

গত বছরের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কার্ফু। ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলতি মাসেও মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির অদূরে বোমা পাওয়া গিয়েছে! আঁটসাঁট করা হয়েছে বীরেনের নিরাপত্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement