জিগরের সঙ্গে ইয়ুসুফ। ছবি সংগৃহীত
এক লিটার পেট্রোল ১০৯ টাকা। এক কেজি ছোলা ৬০ টাকার কিছু বেশি। ঔরঙ্গাবাদের শেখ ইয়ুসুফ তাই গাড়ির বদলে ঘোড়া কিনেছেন।
মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের একটি কলেজের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউসুফ। ক্লাস শুরু হয় সকাল থেকে। গবেষণাগারের সহকারী ইউসুফকেও সাত সকালেই পৌঁছে যেতে হয় কর্মক্ষেত্রে। রাজপথে অটো-বাসকে পাশ কাটিয়ে ইউসুফের ঘোড়া ঠিক সময়ে পৌঁছে দেয় তাঁর গন্তব্যে।
বাস-ট্যাক্সির ভিড়ে ইউসুফকে পিঠে নিয়ে তার ঘোড়ার সেই বেদম ছুট এতদিন বড় বড় চোখে দেখতেন ঔরঙ্গাবাদের মানুষ। ইউসুফের নাম তাঁরা দিয়েছিলেন ‘ঘোড়াওয়ালা।’ এখন অবশ্য দৃশ্যটি গোটা বিশ্ব দেখছে। ইউসুফ আর তার ঘোড়ার দৌড় ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক-টুইটারে।
ইউসুফের ঘোড়ার নাম ‘জিগর’। উর্দু শব্দটির অর্থ হৃদয়। কাঠিয়াওয়াড়ি জাতের কালো তেজি জিগরকে ইউসুফ কিনেছিলেন লকডাউনের সময়।
তখন রাস্তাঘাটে গাড়ি চলবে কি না তা নিয়ে সংশয় কাটছে না। জ্বালানি তেলের দামও বাড়ছে। ঠিক তখনই ইউসুফের বহুদিনের কেনা মোটরবাইকটিও খারাপ হয়ে যায়। নতুন গাড়ি কিনতে পারতেন। কিন্তু ঔরঙ্গাবাদের ঘোড়াওয়ালা ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়া কিনে ফেলেন। কারণ তাঁর মনে হয়েছিল এটাই সুবিধাজনক বিকল্প। সেই বিকল্পই আপাতত ইউসুফের দুনিয়াজোড়া খ্যাতির কারণ। ব্যক্তি বিশেষে কুখ্যাতিরও।
অনেকেরই মত, এ ভাবে পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছন ইউসুফ। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, জ্বালানির খরচ বাঁচাতে ইউসুফ তো সাইকেলও কিনতে পারতেন। কম খরচেই হয়ে যেত। ব্যঙ্গও করেছেন কেউ কেউ।
তবে যে যাই বলুক পরোয়া নেই ইউসুফের। সাদা পাঠান কুর্তা আর ঢলঢলে পাতলুনে ইয়ুসুফের ‘অফিস’ যাওয়ার পোশাক। মাথায় রেশম ফেজ টুপি চাপিয়ে আর কাঁধে চামড়ার ঝোলা নিয়ে রোজ সকালে জিগরের লাগামে টান মারেন ইউসুফ।