এ বার ত্রিপুরাই ‘পাখির চোখ’ করছেন মমতা

বাংলায় তাঁর দলেরই কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য। এ বার তিনি ত্রিপুরাকে ‘পাখির চোখ’ করেছেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যেও তৃণমূলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

Advertisement

সঞ্জয় সিংহ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০৩:০২
Share:

বাংলায় তাঁর দলেরই কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য। এ বার তিনি ত্রিপুরাকে ‘পাখির চোখ’ করেছেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যেও তৃণমূলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

বাংলায় তাঁর দলেরই কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য। এ বার তিনি ত্রিপুরাকে ‘পাখির চোখ’ করেছেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যেও তৃণমূলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

Advertisement

ত্রিপুরায় ৬ কংগ্রেস বিধায়ককে নিজেদের ঘরে ঢোকানোর পরে কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে বসে বুধবার মুকুল জানিয়েছেন, ২০১৮-য় ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে তাঁদের লক্ষ্য, সেখান থেকে সিপিএমকে হঠানো। মুকুল এই লড়াইকে অভিহিত করছেন ‘মিশন ২০১৮’ বলে। আর এই ‘মিশন’কে সফল করতে এ বার ত্রিপুরা অভিযান করবেন মমতা। কবে তৃণমূল নেত্রী ত্রিপুরা যাবেন, তার দিনক্ষণ অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মুকুলের কথায়, ‘‘দিদি শীঘ্রই ত্রিপুরা যাবেন। ত্রিপুরায় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে তিনি ঘন ঘন সেখানে যাবেন।’’

বাংলার ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে কেরলের মতোই ত্রিপুরায় কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ অস্বস্তিতে পড়েছিলেন। সম্প্রতি অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে চতুর্থ স্থান পেয়ে জামানত খুইয়েছে কংগ্রেস। আসনটি জিতেছিল সিপিএম, দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। তার পরেই ত্রিপুরায় কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে অশনি সঙ্কেত দেখতে শুরু করেন দলের নেতাদের একাংশ। সুদীপ রায়বর্মনের মতো কংগ্রেসের রাজ্য নেতাদের কয়েক জন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, বাংলায় বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করায় ত্রিপুরায় কংগ্রেস দুর্বল হয়ে পড়বে। বাংলার ভোটে তৃণমূলের অভূতপূর্ব সাফল্যের পরেই সুদীপবাবুরা যেমন তৃণমূলে যোগদানের ব্যাপারে সক্রিয় হন, তেমনই মমতার নির্দেশে আগরতলায় গিয়ে রাজনৈতিক জমি তৈরির কাজে হাত দেন মুকুল। কংগ্রেসের ৯ বিধায়কের মধ্যে ৬ জন ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মুকুলের বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় তৃণমূলের জমি প্রস্তুত। সেখানকার মানুষ তৃণমূলের হাত ধরে রাজ্যে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু করতে উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। আমরা মানুষের সেই আকাঙ্খাকে বাস্তবায়িত করতে চেষ্টা করছি।’’

Advertisement

ত্রিপুরায় কংগ্রেসে ভাঙন ধরাতে আগেও সক্রিয় হয়েছিল তৃণমূল।
তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটের মুখে সেখানে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের একাংশ তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে রতন চক্রবর্তী (যিনি এখম ত্রিপুরায় তৃণমূল চেয়ারম্যান) কলকাতায় তৃণমূল ভবনে বসে দাবি করেছিলেন, ত্রিপুরায় তৃণমূল বৃহৎ শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। কিন্তু সে বার কংগ্রেস ১০টি আসন পেলেও কোনও আসন পায়নি তৃণমূল। এ বার হাতে সময় থাকতেই ভোটের সলতে পাকাতে চাইছেন মুকুলেরা।

কিন্তু এখন তাঁদের পালে যে হাওয়া লেগেছে, শেষ পর্যন্ত দু’বছর পরে ত্রিপুরায় কি তা ধরে রাখা যাবে? মুকুল বলেন, ‘‘প্রথমত, ত্রিপুরায় দলের রাশ ধরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। দ্বিতীয়ত, ২০১৩-র ভোটে ত্রিপুরায় আমরা ‘রাজ্য দলে’র মর্যাদা হারিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে আমরা প্রার্থী দিয়েছিলাম এবং ২০১৩ সালের হারানো মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছিলাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement