ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করা হল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) উপাচার্য মামিডালা জগদেশ কুমারকে।
গত ৭ ডিসেম্বর ডিপি সিংহ অবসর নেওয়ার পর থেকেই ফাঁকা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামক সংস্থাটির চেয়ারম্যান পদ। এখনও ফাঁকা ভাইস-চেয়ারম্যানের পদও।
গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ জগদেশকে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করার পরে শিক্ষায় গৈরিকিকরণের অভিযোগে ফের সরব হয়েছেন বিরোধীরা। জেএনইউ-এর উপাচার্য থাকাকালীন বার বার বিতর্ক তৈরি হয়েছে জগদেশের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। কখনও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে রামায়ণ-মহাভারত পড়ানোর জন্য সক্রিয় হয়েছিলেন, আবার কখনও দুঃস্থ পড়ুয়াদের নির্ধারিত ফি বাড়িয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতার মুখে পড়েছিলেন। সেই নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল বিস্তর। দু’বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম ছাত্রছাত্রী সংগঠনের একাধিক নেতানেত্রী এবং শিক্ষকদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির ছাত্র সংগঠনের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় বিজেপি ঘনিষ্ঠতার কারণেই উপাচার্যের তরফে কোনও সক্রিয়তা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয় ছাত্র সংগঠনের তরফে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে জেএনইউয়ের উপাচার্য পদে আনা হয় জগদেশকে। দেশের অন্যতম সেরা এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘সঙ্ঘীকরণ’ সেই উদ্দেশ্যের অন্যতম বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
জগদেশের অন্তর্ভুক্তির জেরে এ বার ইউজিসি-র হাত ধরে শিক্ষায় আরও বেশি গৈরিকিকরণের ছায়া পড়বে বলে আশঙ্কায় শিক্ষক-শিক্ষাবিদ-পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ।
জেএনইউ-এর উপাচার্যের পদে আসীন হওয়ার আগে আইআইটি দিল্লির ডিপার্টমেন্ট অব ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যাপনা করেছেন জগদেশ। তিনি আইআইটি মাদ্রাজ থেকে এমএস এবং পিএইচ ডি করেন। পরে কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার বিভাগে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা করেন। বিজ্ঞান বিষয়ক একাধিক আন্তর্জাতিক জার্নালের সম্পাদকীয় বোর্ডেও রয়েছেন। এ ছাড়াও একাধিক জার্নালের সম্পাদনার দায়িত্বে রয়েছেন জগদেশ।
ন্যানো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসেস, ন্যানোস্কেল ডিভাইস মডেলিং অ্যান্ড সিমুলেশন, ইনোভেটিভ ডিভাইস ডিজ়াইন এবং পাওয়ার সেমিকনডাক্টর ডিভাইস-এর উপরে কাজের জন্য সমাদৃত জগদেশ। এই বিষয়ে তিনটি বই ছাড়াও আড়াইশোরও বেশি লেখা রয়েছে তাঁর।
ইউজিসি চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পরে জগদেশকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে জেএনইউ-এর তরফে।