উপলক্ষ্য গঙ্গা সাফাই নিয়ে আলোচনা। নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পাঁচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডাকা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। ফলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আজ সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা জানিয়েছেন, আমন্ত্রণ থাকলেও ২৬ মার্চের বৈঠকে যোগ দিতে তিনি দিল্লি যেতে পারছেন না। রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কাউকে পাঠাবেন।
কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেই গঙ্গাকে স্বচ্ছ করতে পদক্ষেপ করছেন মোদী। এর জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা ছাড়াও, ওই প্রকল্পে স্বেচ্ছায় অর্থ প্রদানকারীদের আয়করে ১০০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার ঘোষণাও করেছে কেন্দ্র। গঙ্গা সাফাইয়ের প্রশ্নে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করছে, তাতে নিয়মিত ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টও। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ভাবে গঙ্গা সাফাই অভিযানকে তিন ভাগে ভাগ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিন বছরের জন্য স্বল্পকালীন পরিকল্পনা, পাঁচ বছরের মধ্যকালীন ও দশ বছরের দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
গঙ্গা সাফাই অভিযানে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে স্বল্পকালীন পরিকল্পনা রূপায়ণের উপরে। যেখানে সরকারের লক্ষ্য হল, নতুন করে গঙ্গার জলদূষণ রোখা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট বানিয়েছে কেন্দ্র। জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক বলছে, এই তথ্য অনুযায়ী সব মিলিয়ে ১১৪টি নিকাশি নালা থেকে প্রতিদিন গঙ্গায় বর্জ্য পদার্থ জমা হয়। সংখ্যার বিচারে এ ধাঁচের নালা সব থেকে বেশি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (৫৪) ও উত্তরপ্রদেশে (৫১)। বর্জ্য শোধনে রাজ্যগুলি কী পদক্ষেপ করেছে বা তাদের কী ধরনের সাহায্য প্রয়োজন, সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর।
বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদী। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানালেও, মমতা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, সদ্য দিল্লি ঘুরে এসেছেন তিনি। ফলে দু’সপ্তাহের মাথায় ফের দিল্লি যাওয়াটা তাঁর পক্ষে বেশ অসুবিধার। তা ছাড়া এত ঘন ঘন দিল্লি গেলে রাজ্যের কাজকর্মও আটকে থাকে। তাই এখনই তিনি দিল্লি যাওয়ার কথা ভাবছেন না। তৃণমূল সূত্রেও বলা হয়েছে, পরের মাসেই পুর ভোট। ফলে এই সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি যাওয়া বেশ কঠিন। প্রশাসনিক কাজ ছাড়াও দলের প্রচারে ব্যস্ত থাকতে হতে পারে তাঁকে।
তবে দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব কে করবেন, মুখ্যমন্ত্রীই তা ঠিক করে দেবেন।