শীতে দিল্লিতে চা-চক্র ডাকতে পারেন মমতা

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে— দিদি, সমস্ত আঞ্চলিক দলের নেতাদের নিয়ে এ বার দিল্লিতে আপনি একটা চা-চক্রের আয়োজন করুন।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৩
Share:

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে— দিদি, সমস্ত আঞ্চলিক দলের নেতাদের নিয়ে এ বার দিল্লিতে আপনি একটা চা-চক্রের আয়োজন করুন।

Advertisement

তা শুনে মমতা নীতীশকে বলেন, ‘‘বিহার নিবাসে আপনিও তো সেটা করতে পারেন! আমরা সবাই আসব।’’ কিন্তু নীতীশ চান মমতাই চা-চক্রটি ডাকুন।

কেন? কারণ অ-বিজেপি নেতাদের নিজেদের মধ্যেও বেশ কিছু আকচা আকচি রয়েছে, যার মধ্যে মমতা নেই।

Advertisement

যেমন উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের সঙ্গে নীতীশের মন কষাকষি চলছে। বিহারে নির্বাচনের সময় পুরনো জনতা পরিবারকে এক করার যে প্রয়াস লালু-নীতীশ করেছিলেন, তাতে মুলায়মকেও তাঁরা সঙ্গে পেতে চেয়েছিলেন। সপা নেতাকে সর্বভারতীয় সভাপতি করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। মুলায়ম তা প্রত্যাখ্যান করেন। উল্টে বিহারের নির্বাচনে সপা প্রায় সব আসনেই জেডি(ইউ)-কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে বসেন। তবে নীতীশের জোটসঙ্গী লালুপ্রসাদ আবার এখন বেয়াই মুলায়মের পাশে।

মমতার বাসভবনে নৈশভোজে আসার আগে নীতীশ উত্তরপ্রদেশে গিয়েছিলেন দলিতদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে। এই সম্মেলনটি ছিল মায়াবতীর দল ভেঙে বেরিয়ে আসা কর্মীদের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব সে দিন নীতীশকে পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করেন। তাঁকে সরকারি অতিথিশালায় বসিয়ে রাখা হয়। কর্মীদেরও সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। এমনকী নীতীশের সভায় আসা কর্মীদের ঝামেলা না-করার ব্যাপারে হলফনামাও স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় বিস্মিত নীতীশ। তাঁর প্রশ্ন— অখিলেশ সরকার কেন এমন করল? মায়াবতীর দল থেকে ভেঙ্গে আসা কর্মীদের নিয়ে সম্মেলন করলে তো তাঁর খুশি হওয়ারই কথা।

অগস্টের ৬ তারিখে ফের উত্তরপ্রদেশ যাচ্ছেন নীতীশ। সেখানে কংগ্রেস ও অজিত সিংহের দলকে নিয়ে একটি জোট গড়ারও চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে মমতা মনে করছেন, আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে এই বিবাদ নিরসন হওয়া দরকার। নীতীশের ধারণা— মমতা আমন্ত্রণ জানালে মুলায়মও আসতে পারেন।

এ দিকে সংসদে মুলায়মের দলের নেতা রামগোপাল যাদব কিন্তু মমতার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। মমতা মুলায়মকে জানিয়েছেন, ভোটের সময় লড়াই হতে পারে। কিন্তু মোদী সরকারকে সরানো এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঝগড়ায় লাভ হবে বিজেপির। কাজেই শীতকালীন অধিবেশনের সময় নভেম্বর-ডিসেম্বরে একটি চা-চক্রের আয়োজন হতেই পারে। সেই চা-চক্রে এনসিপি, আপ, ডিএমকে, এডিএমকে-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের নেতারা থাকতে রাজি হয়েছেন।

মমতার বাড়িতে সে দিন নৈশভোজে নীতীশের জন্য বিশেষ আলুর চোখা বানিয়েছিলেন মমতা। আবার কেজরীবাল মমতাকে বলেন, ‘‘আমার বাবা-মা অসুস্থ। তাঁরা এক বার তোমাকে দেখতে চান।’’ মমতা তাই নিজেই যান কেজরীর বাড়িতে। সেখানে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আসেন।

প্রশ্ন শুধু একটাই— বিহারের নীতীশ-লালু কংগ্রেসের জোটসঙ্গী। মমতা কি চা-চক্রে কংগ্রেসকেও ডাকবেন? মমতার জবাব, ‘‘বাংলায় কংগ্রেস এখন সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধে রয়েছে। এখন মোদী-বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিতে কংগ্রেস নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক।’’ তৃণমূল সূত্র বলছে, মোদী-বিরোধী রাজনীতির মঞ্চে কংগ্রেস কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement