Mamata Banerjee

বিরোধী জোটের পালে হাওয়া দিতে দিল্লির মঞ্চে মমতা

মঙ্গলবার সকালে যখন তৃণমূল নেত্রী সংসদ ভবনে পা রাখলেন, তখনই যেন আরও দৃঢ় হয়ে গেল বিরোধী জোট গঠনের সেই বহু চর্চিত ছবিটা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ১৫:১৬
Share:

শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠকে মমতা। সোমবার দিল্লিতে। নিজস্ব চিত্র।

অখিলেশ যাদব হোন বা মায়াবতী, কে চন্দ্রশেখর রাও বা লালুপ্রসাদ যাদব— সব নেতারাই বিজেপি বিরোধী জোটে চান তাঁকে। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, চন্দ্রবাবু নায়ডু বা শরদ পওয়ার কোনও না কোনও সময় প্রত্যেকেই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্র বিরোধী জোট নিয়ে যখন সরগরম রাজনীতি, তখনই সোমবার তিন দিনের সফরে রাজধানী পৌঁছেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই তিন দিন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, কর্মসূচি রয়েছে মমতার। তবে তার সবই প্রায় বিরোধী জোটকেন্দ্রীক।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে যখন তৃণমূল নেত্রী সংসদ ভবনে পা রাখলেন, তখনই যেন আরও দৃঢ় হয়ে গেল বিরোধী জোট গঠনের সেই বহু চর্চিত ছবিটা। মমতা নিজেই বুঝিয়ে দিলেন, ফেডারেল জোট গঠনের ব্যাপারে তিনি কতটা সক্রিয়। বললেন, ‘‘আজ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কাল আবারও হবে। সব বিরোধী জোটকে নিয়ে আরও আলোচনা করতে হবে।’’

এ দিন সকালে সংসদের সেন্ট্রাল হলে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মমতার সঙ্গে দেখা করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। আসেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত থেকে শুরু করে টিআরএস সাংসদ কে কবিতা এবং টিডিপি নেতারাও। কথা বলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদবের সঙ্গেও। এ দিন মমতা দশটি অ-বিজেপি দলের নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিভিন্ন নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে কথা বলে মমতা সোজা চলে যান সংসদে তৃণমূলের ঘরে। বেশ কিছু ক্ষণ সেখানে কাটান নেত্রী। দলীয় সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: সনিয়ার সঙ্গে মমতার বৈঠক এ বার হচ্ছে না

এর পর দুপুর দেড়টা নাগাদ এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার এবং প্রফুল্ল পটেল সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সূত্রের খবর, বিরোধী জোট নিয়েও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। প্রায় আধ ঘণ্টা তাঁদের মধ্যে কথা হয়। তার পরই সাংবাদিকের মুখোমুখি হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যাশিত ভাবে দিল্লি থেকে ফের বিজেপিকে আক্রমণও করেন মমতা। বলেন, ‘‘বিজেপির যাওয়ার সময় এসে গিয়েছে। আজ যারা ক্ষমতায়, কাল তারা ক্ষমতায় থাকবে না।’’ পাশাপাশি, লোকসভায় বিরোধীরা কোনও মর্যাদা পাচ্ছে না বলেও এ দিন সরব হন মমতা।

বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গড়ার লক্ষ্যে তৎপর হয়েছেন মমতা। কয়েক দিন আগে কলকাতায় এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। ফোনে কথা বলেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। তবে, সেই সব আলোচনায় মূলত অ-কংগ্রেসি ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের উপর জোর দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ১২ মে কর্নাটকে ভোট, জানাল কমিশন

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোট গড়লে বিরোধী ভোট আরও ভাঙবে। তা কতদূর বাস্তবসম্মত হবে, বলা কঠিন। মমতা তাই এখনই এ ব্যাপারে শেষ কথা বলতে রাজি নন। বরং কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার পরিসর খোলা রাখতে চান। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, সনিয়া এবং মমতা দু’জনেই পরস্পর দেখা করতে আগ্রহী। তবে সনিয়া শিমলাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের পর শিমলায় প্রিয়ঙ্কার বাড়ি দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বৃষ্টির পর হঠাৎই ঠান্ডা লেগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই জন্যই মমতার এ বারের সফরে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে যে তাঁর মাঝে মধ্যেই এসএমএস আদানপ্রদান হয়, তাও এ দিন জানিয়েছেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement