বহিঃশত্রু নয়। আসল শত্রু শরীর।
জঙ্গি হামলা বা মাওবাদীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নয়, ফি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি বলে সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে করানো সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, মানসিক অবসাদ, সঠিক চিকিৎসা ও ওষুধের অভাব, এইচআইভি সংক্রমণ আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের মৃত্যুর বড় কারণ। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গত দু’বছরে (২০১৬ ও ২০১৭) সালে হার্ট অ্যাটাকে ৮৯ ও ১১৩ জন জওয়ান মারা গিয়েছেন। সংঘর্ষজনিত কারণে ওই সময়ে ৪২ ও ৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মৃত্যুর কারণ হিসাবে উঠে এসেছে ম্যালেরিয়া, ক্যানসার ও সাপের কামড়ও। অসম রাইফেলস-এ সাম্প্রতিক সময়ে এইচআইভি সংক্রমণের ২৪টি ঘটনা সামনে এসেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতে মোতায়েন ওই বাহিনীর জন্য অবিলম্বে সচেতনতা কর্মসূচি বাড়ানোর উপরে সুপারিশ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর পিছনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বেশি সময় ধরে কাজ করা, ছুটি না পাওয়া, মানসিক অবসাদ, পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব, সঠিক বাসস্থানের অভাবকেই দায়ী করা হয়েছে রিপোর্টে। বছর দেড়েক আগে বিএসএফের এক জওয়ানের ভিডিয়ো জনসমক্ষে এসেছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, পোড়া রুটি ও ডাল খেয়ে কী ভাবে কাটাতে হচ্ছে ওই জওয়ানদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ওই ভিডিয়োর সত্যতা মানতে না চাইলেও রিপোর্টে তা কার্যত স্বীকার করে বলা হয়েছে, মাওবাদী এলাকা, প্রত্যন্ত এলাকায় মোতায়েন জওয়ানদের খাওয়ার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় হাট বা গ্রামের মানুষের উপরেই নির্ভর করে থাকতে হয়।
আরও পড়ুন: ‘নরেন্দ্র মোদীর জয় নয়, বলুন ভারতমাতার জয়’, নিজের জয়ধ্বনি শুনতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী
সমস্যার মোকাবিলায় ছাউনিগুলিতে চিকিৎসাব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া, বাসস্থানের অভাব, পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা, সময়ে ছুটি না পাওয়া, সবর্দা মৃত্যুভয়ের মতো কারণে বাড়ছে মানসিক অবসাদগ্রস্তের সংখ্যাও। গত সাত বছরে আত্মহত্যা করেছেন ৩০১ জন জওয়ান। যা রুখতে অবিলম্বে সেনা ছাউনিগুলিতে মনোবিদ নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।