ফাইল চিত্র।
বিজেপির সাসপেন্ডেড (নিলম্বিত) জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে নেটমাধ্যমে পোস্ট করার ‘অপরাধে’ ৫৪ বছর বয়সি এক রসায়নবিদকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠল মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে। ওই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
স্থানীয় পুলিশের বক্তব্য, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২১ জুন। উমেশ প্রহ্লাদরাও কোলহে নামে এক রসায়নবিদ খুন হন অমরাবতীতে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, নূপুরের সমর্থনে নেটমাধ্যমে পোস্ট করার ফলেই ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচ যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অমরাবতীর পুলিশ কমিশনার আরতি সিংহ বলেছেন, ‘‘রসায়নবিদকে হত্যার ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত ইরফান খানের (৩২) খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।’’ ইরফান একটি এনজিও চালান বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
অমরাবতীর কোতোয়ালি থানার এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘অমরাবতী শহরে একটি ওষুধের দোকান চালান কোলহে। নূপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ভুলবশত ওই পোস্টটি কোলহে সংখ্যালঘুদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়েছিলেন।’’
পুলিশের দাবি, এর পরই কোলহেকে খুনের পরিকল্পনা কষা হয়। ইরফানই ওই পরিকল্পনার জনক। রসায়নবিদকে খুনের জন্য বাকি পাঁচ অভিযুক্তকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ‘প্রলোভন’ দেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২১ জুন রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে খুনের ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় দোকান থেকে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন কোলহে। অন্য একটি গাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও পুত্র। বাইকে করে এসে অভিযুক্তরা কোলহেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে চম্পট দেয়। রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন কোলহে। তাঁর ছেলে সঙ্কেত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু কোলহেকে বাঁচানো যায়নি।
সঙ্কেতের অভিযোগের ভিত্তিতেই পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সকলেই অমরাবতীর বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। অন্য দিকে, অমরাবতীর বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, কোলহেকে হত্যার ঘটনায় উদয়পুরে দর্জিকে খুনের যোগসূত্র রয়েছে।
উল্লেখ্য, নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির খবর প্রকাশ্যে এসেছে। প্রভাব পড়েছে বিদেশেও। বিজেপি নেত্রীর মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে ইরান, কাতার, আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে নূপুরকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বলেছে, টিভি চ্যানেলে গিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে। নুপূরের মন্তব্যের জন্যই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, নূপুর তদন্তে ‘সহযোগিতা’ করছেন। দিল্লি পুলিশের সেই দাবি নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।