ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার, ছুটির দিন। তাই অরবিন্দ চৌবে রাস্তায় ক্রিকেট খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎই তাঁর ভাই হন্তদন্ত হয়ে বাড়িতে ঢুকে তাঁকে জানান বিষাক্ত গ্যাসের কথা। ভাইয়ের মুখ থেকে এই কথা শোনার পর ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। এক সংবাদমাধ্যমকে অরবিন্দ বলেন, “ঘটনাস্থলে পৌঁছেই আতঁকে উঠেছিলাম। দেখলাম, রাস্তায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন কয়েক জন। চোখের সামনে দু’তিন জনকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে দেখলাম। এক ভয়াবহ দৃশ্য।”
রবিবার সকালে পঞ্জাবের লুধিয়ানায় গ্যাস লিক করে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। মৃতদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষ এবং ছয় মহিলা। বেশ কয়েক জন অসুস্থ। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। লুধিয়ানার স্থানীয় প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করছে, কোনও ফ্রিজ থেকে গ্যাস লিক করে এই দুর্ঘটনা। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে অনেকগুলি কলকারখানা রয়েছে। সেই কারখানাগুলির খুব কাছেই রয়েছে বহু বাড়ি। ফলে সেই গ্যাস সহজেই লোকালয়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। যার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু বাসিন্দা।
অরবিন্দ জানান, এ রকম দৃশ্য দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেও লোকজনকে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি এবং তাঁর ভাই। কিন্তু তাঁদের মৃত্যু হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অরবিন্দের কথায়, “লোকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে ঝাঁঝালো গ্যাসে মাথা ঘুরছিল, দমবন্ধ হয়ে আসছিল। মনে হচ্ছিল এখনই মরে যাব। কোনও রকমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি।”
অরবিন্দের ভাই আশিস জানিয়েছেন, লোকজন আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছিল। অ্যাম্বুল্যান্সে কয়েক জনকে তুলে নিয়ে যেতে দেখেন। আরও বেশ কয়েক জন রাস্তায় অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর কথায়, “এক ব্যক্তির স্ত্রী জ্ঞান হারিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি স্ত্রীর চোখেমুখে জলের ঝাপটা দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন। সাহায্য করার জন্য আমাকে ডাকলেন। তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই দেখলাম ওই ব্যক্তিও জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় পড়ে গেলেন। চারদিক তখন ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল। দমবন্ধ হয় আসছিল।” এই অবস্থা দেখে তিনি পুলিশকে ফোন করেন বলে জানিয়েছেন আশিস।