অযোধ্যা মামলা পিছিয়ে দিচ্ছে কংগ্রেস, বললেন মোদী। —ফাইল ছবি
লোকসভা ভোটের আগে রাম মন্দির নিয়ে ঘরের চাপে বেসামাল বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই মন্দির তৈরির কাজ শুরু করার দাবিতে সরব দলের কট্টরপন্থীরা। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আর শিবসেনা যখন মন্দির নির্মাণে ঢিলেমির অভিযোগ তুলে অযোধ্যায় একের পর এক তোপ দাগছেন, তখন রাজস্থান থেকে ঘরের সেই চাপ এ বার বাইরেই ঠেলে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে অলওয়ারের জনসভায় মোদী বললেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের উপর চাপ তৈরি করছে কংগ্রেস। ‘ইমপিচমেন্ট’ এর ভয় দেখাচ্ছে প্রধান বিচারপতিকে।
রাম মন্দির তৈরির দাবিতে অযোধ্যায় চলছে বিশাল জমায়েত। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্ম সংসদে যোগ দিয়েছেন বহু সাধু সন্ত। রাম মন্দির তৈরিতে বিজেপির ঢিলেমি নিয়ে ক্রমাগত তোপ দাগছেন তাঁরা। অন্য দিকে জমায়েতে যোগ দিয়ে শনিবারই মন্দির ইস্যুতে কড়া তোপ দেগেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে।
এই সাঁড়াশি চাপের কাছে কার্যত দিশাহারা দেখাচ্ছিল বিজেপিকে। শেষ পর্যন্ত রাজস্থানের অলওয়ারের সভা থেকে চাপমুক্তির উপায় বাতলে দিলেন দলের কাণ্ডারি মোদী নিজেই। কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে মোদীর তোপ, ‘‘বিচার বিভাগ নিয়েও রাজনীতি করছে কংগ্রেস। ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করছে। ওরাই শীর্ষ আদালতকে বলেছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের জন্য শুনানিতে দেরি করিয়ে দিতে। প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচ করতে ওরা যা খুশি তাই করছে।’’ এই প্রসঙ্গেই বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর আগের বিচারপতি দীপক মিশ্রর ইমপিচমেন্টের বিষয়টিও তুলে ধরেন মোদী।
আরও পড়ুন: কেউ জানে না, মোদীর বাবার নাম কী! বললেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলা ঝুলে রয়েছে। অক্টোবরেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আদালতের অন্য কাজ রয়েছে। তাই জরুরি শুনানি সম্ভব নয়। জানুয়ারিতে শীর্ষ আদালত জানাবে কবে থেকে শুনানি শুরু হবে। তার পর থেকেই কট্টরপন্থীরা সরব হয়েছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের চমক! ভোট দিলেই মিলতে পারে বাইক, স্কুটি বা মোবাইল!
অন্য দিকে শনিবারের পর রবিবারও অযোধ্যায় ধর্ম সংসদ চলছে। রবিবারও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, রাম মন্দিরের জন্য সরকারের আইন আনা উচিত। শিবসেনার আলাদা কর্মসূচিতে রয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। তবে উভয়েরই বক্তব্যের মূল সুর এক। কেন্দ্র এবং উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সরকার। আদালতকে এড়িয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করে আগামী বছর ভোটের আগেই রাম মন্দির তৈরির কাজ শুরু হোক। তাতে শ্যাম এবং কূল দুইই রক্ষা হবে। অর্থাৎ আইন বাঁচিয়েও রাম মন্দির তৈরিতে কোনও বাধা থাকবে না।
ভোট যত এগোবে, মন্দিরের দাবি যে আরও জোরদার হবে, তা বুঝছেন মোদী-অমিত শাহ-রা। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে মোদী সুকৌশলে সেই চাপই কিছুটা কমানোর চেষ্টা করলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।