শত্রুঘ্ন সিন্হা। —ফাইল চিত্র।
লড়বেন তিনি পটনা সাহিব থেকেই। তবে বিজেপি না বিরোধী কংগ্রেসের হয়ে, তা এখনও ঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতার জন্য বিজেপির বিদ্রোহী নেতা তথা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হার গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে। যার জেরে এ বছর পটনা সাহিব থেকে শত্রুঘ্নর বদলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে দাঁড় করানো হবে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
শত্রুঘ্ন জানিয়েছেন, কোন দলে তিনি যোগ দেবেন তার ঘোষণা করবেন আগামী ২২ মার্চ। তিনি বলেন, ‘‘যে আসন থেকে জিতেছি। সেখান থেকেই ফের লড়ব। ব্যস, অপেক্ষা করুণ আর দেখুন।’’শত্রুঘ্ন সিনহার কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছে। তার মধ্যে আবার তিনি বিহারে লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রার্থী হতে পারেন বলেও খবর মিলেছে। তবে বিজেপি ছাড়লে কোন দলে যোগ দেবেন, শত্রুঘ্ন নিজে তা এখনও পর্যন্ত খোলসা করেননি।
অন্য দিকে, তাঁর স্ত্রী পুনম সিন্হার রাজনীতিতে যোগদান নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, তিনি নিজে ভোটের ময়দানে থাকবেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও নামাতে চাইছেন পটনা সাহিবের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিংহ। নিজে বিহার থেকে নির্বাচনে দাঁড়ালেও স্ত্রী পুনম সিনহাকে উত্তরপ্রদেশ থেকেই দাঁড় করাতে চাইছেন বিজেপির বিদ্রোহী সাংসদ। মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে কংগ্রেসের টিকিটেই পটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে লড়বেন শত্রুঘ্ন। তবে স্ত্রী সমাজবাদী পার্টির টিকিটে লখনউ অথবা উত্তরপ্রদেশের অন্য কোনও বড় শহর থেকে লড়তে পারেন।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তে কমিশন, সিপি-র কাছে ভিডিয়ো ফুটেজ তলব
আরও পড়ুন: এ বার তৃণমূলের জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে শোকজ করল কমিশন
২০০৯ এবং ২০১৪, পর পর দু’বারবিজেপির টিকিটে পটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে জিতেছেন বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন। গত বার জেতার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি শত্রুঘ্নের। তাতেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলের বদলে মহাজোটের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন তিনি। লালুপ্রসাদকে পারিবারিক বন্ধু বলে উল্লেখ করে দলের নেতাদের একের পর এক সমালোচনা করতে শুরু করেন। এমনকী সম্প্রতি কলকাতার ব্রিগেডে তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা জনসভায় উপস্থিত হন তিনি। আর এতেই ক্ষুব্ধ হন বিজেপি নেতারা।
রাজনীতিতে সব সময়েই নিজের বাগপটুতার জন্য বিখ্যাত শত্রুঘ্ন। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দফতর সামলেছেন তিনি। নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার জন্য প্রথম দিকে সরব ছিলেন এই কায়স্থ নেতা। কিন্তু নির্বাচন জেতার পরে দু’জনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। আগামী ১৯ মে পটনা সাহিব কেন্দ্র নির্বাচন হবে। সে কারণে একটু দেরি করে মাঠে নামতে চাইছেন শত্রুঘ্ন। কায়স্থ সম্প্রদায়বহুল পটনা সাহিব কেন্দ্রে তাঁর গুরুত্ব রয়েছে বলেই মনে করছেন। সে কারণেই দল পাল্টালেও কেন্দ্রে পাল্টাতে রাজি নন তিনি। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির অফার থাকায় সেখানে স্ত্রীকে দাঁড় করিয়ে চমক দিতেও চাইছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সময় এসে গিয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। বিজেপির সঙ্গে আমার পথ আলাদা হয়ে যাবে। খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেব আমি।’’
(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)