নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ ওমর আবদুল্লার।—ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচন হবে পাঁচ দফায়। তবে এখনই বিধানসভা নির্বাচন নয় জম্মু-কাশ্মীরে। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানাল নির্বাচন কমিশন। আর তাতেই ফুঁসে উঠলেন উপত্যকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্ব। রাজ্যে সুশাসন ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও, কেন্দ্রীয় সরকার তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তাঁরা।
রবিবার বিকেল ৫টায় সাংবাদিক বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা। তাতে ১১ এপ্রিল থেকে ৭ দফায় লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা করেন তিনি। জম্মু-কাশ্মীরে পাঁচ দফায় নির্বাচন হবে বলে জানান তিনি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে জানান,‘‘শুধুমাত্র অনন্তনাগ নির্বাচনী কেন্দ্রেই তিন দফায় ভোট করাতে হচ্ছে আমাদের। তাই কাশ্মীরের পরিস্থিতি আঁচ করতে পারছেন নিশ্চয়ই! এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। এই মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি বিধানসভা নির্বাচনের পক্ষে অনুকুল নয় বলে জানানো হয়েছে।’’
তবে পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতির জেরেই এখনই নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। আর তাতেইফুঁসে ওঠেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। পর পর বেশ কিছু টুইট করেন তিনি। তাতে রাজনাথ সিংহ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কাশ্মীর নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার আসলে নির্বাচন হতে দিতেই চায় না, তাই এ সব বাজে অজুহাত দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফায় নির্বাচন, দেখে নিন কবে-কোথায় ভোট
আরও পড়ুন: ১১ এপ্রিল থেকে সাত দফায় ভোট দেশ জুড়ে, ফল ঘোষণা ২৩ মে
টুইটারে ওমর আবদুল্লা লেখেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। নির্বিঘ্নে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেছিলেন। কী হল তাঁর সেই প্রতিশ্রুতির?’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন ওমর আবদুল্লা। মোদী সমর্থকদের উদ্দেশে লেখেন, ‘১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম সময়ে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে না জম্মু-কাশ্মীরে। এ বার থেকে যখনই প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা করবেন, এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন আশাকরি। বন্যায় গোটা কাশ্মীর ভেসে যাওয়ার পরও ২০১৪ সালে ঠিক সময়ে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল। এতেই বোঝা যায়, বিজেপি এবং বিজেপি-পিডিপি জোট কীভাবে কাশ্মীরের অপব্যবহার করেছে।’
পুলওয়ামা হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।তার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরের উপর নজর রয়েছে সারা দুনিয়ার। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হতে না দিয়ে নরেন্দ্র মোদী আসলে নিজের দুর্বলতাই সকলের সামনে তুলে ধরেছেন বলেও মত ওমর আবদুল্লার। বিধানসভা নির্বাচন না হতে দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। তাঁর দাবি, ‘নির্বাচন হতে না দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের আরও ক্ষতি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষকে পছন্দের সরকার বেছে নিতে না দেওয়া গণতন্ত্রের পরিপন্থী। একে মানুষকে কোণঠাসা করে দেওয়ার প্রচেষ্টাও বলা যায়। যাতে হাতে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে হাতে কিছুটা সময় পাওয়া যায়।’
এর আগে ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরে। তাতে বিজেপি-পিডিপির জোট সরকার গড়ে উঠেছিল। কিন্তু মতবিরোধের জেরে শেষ পর্যন্ত সরকার ভেঙে যায়। তার পর সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়।
(কী বললেন প্রধানমন্ত্রী, কী বলছে সংসদ- দেশের রাজধানীর খবর, রাজনীতির খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)