মায়াবতী ও নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের মধ্যে তলায় তলায় সমঝোতা হয়েছে আর তার শিকার হবেন মায়াবতী, নরেন্দ্র মোদীর এই প্রচারে কান না দিয়ে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী এবং রায়বরেলীতে দলীয় সমর্থকদের কংগ্রেসকেই ভোট দিতে বললেন মায়াবতী। একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে মোদীর বিভাজনের রাজনীতি সফল হবে না বলেও বিজেপির উদ্দেশে তোপ দাগলেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী।
ঘটনার শুরু বৃহস্পতিবার, উত্তরপ্রদেশেরই রায়বরেলীতে। সেখানেই নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে সমাজবাদী পার্টির সমর্থকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সদ্য পূর্ব উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের দায়িত্বে আসা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। তার পরই শুরু হয় জল্পনা। সেই জল্পনাকে আরও উসকে দিয়ে আসরে নেমে পড়েন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। শনিবার প্রতাপগড়ের জনসভা থেকে মায়াবতীকে এই নিয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, “কংগ্রেসের প্রতি নরম মনোভাব পোষণ করে সমাজবাদী পার্টি। তাই একই মঞ্চে দাঁড়ানো নিয়ে কোনও আপত্তি নেই দুই দলের নেতাদের। এরা ‘বহেনজি’কে ঠকিয়েছে। কিন্তু উনি আসল খেলাটাই বুঝতে পারছেন না।” একই সঙ্গে বলেন, “মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে বলেছিল ওরা। কিন্তু এখন বহেনজিও বুঝে গিয়েছেন যে, সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস তাঁকে নিয়ে খেলছে।”
মোদীর এই মন্তব্যে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে মায়াবতী অবশ্য বললেন, “মহাজোট যাতে না হয়, তার জন্য কম চেষ্টা করেননি মোদী। বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী উনি। প্রতাপগড়ের সভায় আরও অনেক উল্টোপাল্টা মন্তব্য করেছেন। আসলে উনি চান এসপি-বিএসপি-আরএলডি নিজেদের মধ্যে লড়ে মরুক।” একই সঙ্গে রায়বরেলী এবং অমেঠীতে সনিয়া এবং রাহুলকে ভোট দেওয়ার পক্ষেই জোরাল বার্তা দিলেন মায়া।
আরও পড়ুন: ‘মোদীর ৫ বছর সবচেয়ে ভয়াবহ, ধ্বংসাত্মক’, বললেন মনমোহন
উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং রাষ্ট্রীয় লোক দলের (আরএলডি)-র সঙ্গে জোট বেঁধে বেঁধেছে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে অমেঠী ও রায়বরেলী আসন দু’টি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে এসপি-বিএসপি-আরএলডি জোট। ৩৮টিতে প্রার্থী দিচ্ছে বিএসপি। এসপি প্রার্থী দাঁড় করাবে ৩৭টি আসনে। বাকি তিনটি দেওয়া হয়েছে আরএলডিকে। মোদীর কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে বিরোধী ঐক্যকেই ফের অগ্রাধিকার দিলেন মায়াবতী। রায়বরেলী ও অমেঠীতে আসন দু’টি কংগ্রেসকে আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। এ বার বিরোধী মহাজোটের সমর্থকদের দু’টি জায়গাতেই কংগ্রেসকে ভোট দিতে আর্জি জানালেন তিনি।
মায়াবতীর সুরে সুর মিলিয়ে অখিলেশের তোপও এখন বিজেপিকে লক্ষ্য করেই। তাঁর মতে, “গতবারে যা ফল করেছিল বিজেপি, এ বারে তার চেয়ে ঢের পিছিয়ে তারা। তাই প্রধানমন্ত্রীর কথা বলার ধরন পাল্টে গিয়েছে। আর কোনও রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না। তাই উন্নয়ন বা কৃষকদের আয় নিয়ে একটা কথাও খরচ করছে না। এই মুহূর্তে মানুষকে বিভ্রান্ত করাই মোদীর লক্ষ্য। তবে এসপি-বিএসপি-আরএলডি-ই সরকার গড়বে। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তাও স্থির করবে।”
আরও পড়ুন: মমতার সঙ্গে দু’বার কথা বলতে চেয়েছিলেন মোদী! সাড়া মেলেনি, দাবি পিএমও-র
২০১৪-য় উত্তরপ্রদেশে ৭১টি আসনে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজপার্টির মহাজোট বিজেপির সেই নিরঙ্কুশ আধিপত্যে থাবা বসাতে পারে, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।