ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের কন্ট্রোল ইউনিটে জমা পড়া সংখ্যা গুনলেই ভোটগণনা শেষ হচ্ছে না। সেই সঙ্গে গোনা হবে ভোটার ভেরিফায়েব্ল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট)। সেই জন্য ভোটগণনার আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণায় বাড়তি কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে বলে মত নির্বাচন কমিশনের একাংশের।
ভিভিপ্যাট গণনার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের পাঁচটি করে বুথ লটারির মাধ্যমে বাছাই হবে।
কী ভাবে হবে সেই প্রক্রিয়া?
লটারির জন্য প্রতিটি কাগজকে পোস্টকার্ড সাইজে টুকরো করা হবে। তাতে এক ইঞ্চি বাই এক ইঞ্চি হরফে সাদা-কালো কালিতে বিধানসভা কেন্দ্রের নাম, বুথের নাম এবং নম্বর লেখা হবে। সব বুথের নাম ও নম্বর লেখার পরে সেগুলি রাখা হবে একটি বাক্সে। তার পরে ঝাঁকুনি দিয়ে লটারি হবে। বাক্স থেকে বুথের নাম বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার। গণনা কেন্দ্রে থাকবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক। তবে শুধু লটারি প্রক্রিয়াই নয়, ভিভিপ্যাট কাউন্টিংয়ের জন্য ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ারের মতোই কেবিন তৈরি করা হবে। সেখানে ভিভিপ্যাটের কাগজ গোনা হবে। ভিভিপ্যাটের গণনার ক্ষেত্রে ২৫টি করে বান্ডিল তৈরি করা হবে। গণনার জন্য কেন্দ্র-পিছু সাধারণত আট থেকে ১৪টি টেবিল ব্যবহার হবে। তবে গণনা কেন্দ্রের আকৃতি বড় হলে কোথাও কোথাও টেবিলের সংখ্যা বাড়বে। কমিশনের ছাড়পত্র মেনেই তা করতে হবে রিটার্নিং অফিসারদের।
বিধানসভা কেন্দ্রের একটি বুথের ভিভিপ্যাট গণনা শেষ হলে তবেই দ্বিতীয়টি শুরু করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত গণনাকর্মীরা। তার পরে তৃতীয় এবং চতুর্থ বুথ। সর্বশেষে লটারির মাধ্যমে বেছে নেওয়া পাঁচ নম্বর বুথের গণনা হবে। এক-একটি বুথের ভিভিপ্যাট গুনতে সাধারণত এক ঘণ্টা লাগে বলে জানাচ্ছেন কমিশনের অফিসারেরা। ফলে গোটা ভিভিপ্যাট গোনার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লাগবে।
ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট গণনার সংখ্যা সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে ফল ঘোষণা করবে কমিশন। সব মিলিয়ে ২৩ মে আনুষ্ঠানিক ফলপ্রকাশ হতে চার-পাঁচ ঘণ্টা দেরি হতে পারে বলেই জানাচ্ছেন কমিশনের কর্তারা। পশ্চিমবঙ্গের ভোটগণনার প্রস্তুতি পর্বে আজ, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে ভিডিয়ো-সম্মেলন করার কথা রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতরের। ইতিমধ্যে গণনা প্রক্রিয়ার জন্য এক দফায় প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হয়েছে। রাজ্যের ৪২ লোকসভা আসনের গণনা হবে ৫৮টি কেন্দ্রে।