—ফাইল চিত্র।
ভোট শেষ হতে দশ দিনও বাকি নেই। ভোটের পরে নরেন্দ্র মোদী যাতে সহযোগী জুটিয়ে সরকার গড়তে না পারেন, সে জন্য এখন থেকেই সক্রিয় হল রাহুল গাঁধীর দল।
চলতি সপ্তাহেই দিল্লিতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা দশ জনপথে বৈঠকে বসেন। যেখানে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গাঁধীও। জোটের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাহুল আগেই একটি কমিটি তৈরি করেছেন। সে বৈঠকে এ পর্যন্ত হওয়া ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। ভোট হয়ে যাওয়া কেন্দ্রগুলির বুথ থেকে আসা রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হয়। পাশাপাশিই ভোট পরবর্তী কৌশলও রচনা করেন রাহুলরা। দলের হিসেব, সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেক পিছিয়ে থাকবে মোদীর দল। এনডিএ-র শরিকদের নিয়েও সরকার গড়া কঠিন হবে। এই পরিস্থিতিতে কে চন্দ্রশেখর রাও, জগন্মোহন রেড্ডি, নবীন পট্টনায়কের উপরে ভরসা করতে হতে পারে বিজেপিকে। কিন্তু এই নেতারা যাতে মোদী-মুখী না হন, সে জন্য এখন থেকেই চেষ্টা করতে হবে।
বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জগনের সঙ্গেও যোগাযোগ তৈরি করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের এক নেতা জানান, ‘‘সকলেই ধরে নিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গে আগেভাগেই আঁতাত রয়েছে জগনের। তিনি তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গেই থাকবেন। বিজেপি নেতৃত্ব সে ঘুঁটি সাজিয়েও রেখেছেন। কিন্তু ভোট শেষ হলে বিরোধীদের যে বৈঠক করা নিয়ে আলোচনা চলছে, তাতে জগনকে হাজির করার চেষ্টা হচ্ছে। কেসিআর-এর সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে।’’ কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তাদের দলের নেতা কে ভি টমাস ইতিমধ্যেই জগনের কাকা সুভা রেড্ডির সঙ্গে কথা বলেছেন। জগনকে বিরোধী দলের বৈঠকে আসার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কে চন্দ্রশেখর রাও এখন আর একবার বিজেপি ও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে ‘ফেডারেল ফ্রন্ট’ গড়ার চেষ্টায় নেমেছেন। এর আগে যখন তিনি এ নিয়ে সক্রিয় হয়েছিলেন, তখন বিরোধী নেতারা বলেছিলেন, আসলে মোদীর হাতে তামাক খাচ্ছেন তিনি। এ বারেও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিরোধী নেতারা। কিন্তু কংগ্রেসের কাছে খবর, কেসিআর আসলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। প্রধানমন্ত্রী পদ না পেলেও উপপ্রধানমন্ত্রী হতে চান। সে বার্তা কেসিআর-এর পক্ষ থেকে দক্ষিণের কিছু দলকে দেওয়া হয়েছে। দূত মারফত কংগ্রেস বোঝানোর চেষ্টা করছে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী শিবিরের আঞ্চলিক দলগুলি সরকার গড়তে পারবে না। আর বিজেপির সঙ্গে গেলে কেসিআরের প্রধানমন্ত্রী বা উপপ্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিরোধী শিবিরের সঙ্গে থাকলে বরং সম্ভব।
এ যাবৎ হওয়া ভোটের ভিত্তিতে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ অনুমান, বিজেপি ১৬০-১৭০টির বেশি আসন পাবে না। আজ বিজেপির শরিক অকালি দলের নেতা নরেশ গুজরালও প্রকাশ্যে বলেছেন, বিজেপি গত বারের মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। নির্ভর করতে হবে শরিকদের উপরেই। এমন একটি আবহে কংগ্রেস ভোটের পরে মোদীর জন্য সব পথ বন্ধ করে দিতে চাইছে। চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে ইতিমধ্যেই রাহুল গাঁধী, আহমেদ পটেলদের কথা হয়েছে। ভোট শেষ হলেই বিরোধীরা মিলে একযোগে রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি নিয়ে যেতে চাইছেন। যাতে রাষ্ট্রপতি একক বড় দল হিসেবে আগেই বিজেপিকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ না জানান। কিন্তু বিজেপির বক্তব্য, শরিকদের নিয়ে অনায়াসে সরকার গড়বেন নরেন্দ্র মোদী। ফলপ্রকাশ হলেই বিরোধীদের যাবতীয় প্রয়াস মাঠে মারা যাবে।