তিন জন প্রযোজকই বিজেপির। অভিনেতাও বিজেপির। ছবির পরিচালক ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরাই এ বার লোকসভা ভোটের মুখে নরেন্দ্র মোদীর জীবনী-চিত্র তৈরি করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল, অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি ও রণদীপ সুরজেওয়লা আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করেন। কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর বায়োপিক পুরোটাই রাজনৈতিক। এর সঙ্গে শিল্পকলার কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছি যে এই ধরনের রাজনৈতিক প্রচারে রাশ টানা উচিত। আমরা কমিশনকে লিখিত জানাতে বলেছি, তাঁরা আমাদের অনুরোধ মানছেন কি মানছেন না।’’
প্রধানমন্ত্রী জীবনীভিত্তিক ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’ ছবিটির মুক্তি এগিয়ে নিয়ে এনে ৫ এপ্রিল করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রথম দফার লোকসভা ভোটগ্রহণের আগেই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। সিব্বলের বক্তব্য, ‘‘এটা শুধু বেআইনি কাজ নয়, পুরোটাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটা রাজনৈতিক প্রকল্প। সংবিধানের ৩২৪-তম অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী ভোটারদের সামনে সকলের সমান সুযোগ পাওয়া উচিত। তা লঙ্ঘন হচ্ছে। এই ছবি ‘কেব্ল নেটওয়ার্ক’ বিধি ভাঙছে। লঙ্ঘন করছে জন প্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ ধারাও।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কংগ্রেসের এই অভিযোগ অবশ্য হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি। তাঁর যুক্তি, যে কোনও ভিডিয়োও তো ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। তা হলে আর সিনেমা কী দোষ করল?
কমিশন সূত্রের খবর, নির্বাচনী আচরণবিধি জারি থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রীর জীবনী নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’ ৫ এপ্রিল মুক্তি পেতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেন্সর বোর্ডের সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে। আদর্শ আচরণবিধি সত্ত্বেও ছবিটির বিজ্ঞাপন প্রকাশের জন্য একটি সংবাদপত্রকে শো-কজের নোটিস পাঠানো হয়েছে।
ছবির ট্রেলারে ইঙ্গিত মিলেছে, মোদীর জীবনের নানা দিক, সঙ্ঘের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার যাত্রাপথ, পাক মদতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি নিতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। বিরোধীদের বক্তব্য, এটা আদতে মোদী ও বিজেপির পরোক্ষ প্রচার। এর পরে আসতে চলেছে ‘তাসখন্দ ফাইলস’ নামে একটি ছবি। যাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর তাসখন্দে মৃত্যু রহস্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অনেকের মতে, এই ছবিতেও গাঁধী পরিবারকে নিশানা করা হতে পারে।