যে কাজ এতদিন হল না, সেটি আজ হল কী করে? তোলপাড় সোশ্যাল দুনিয়ার দেওয়াল।
পাঁচ বছরে যা করেননি, আজ তা করবেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটের ঠিক মুখে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন।
এপ্রিলের প্রথম দিনের সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আছড়ে পড়ে খবরটি। ঘোর কাটতে না কাটতে আর একটা ‘ধাক্কা’। নরেন্দ্র মোদী আর রাহুল গাঁধী রাজি হয়েছেন মুখোমুখি বিতর্কে বসতে। কখন? কোথায়? কবে? সেই কতদিন ধরে রাহুল গাঁধী চ্যালেঞ্জ করছেন নরেন্দ্র মোদীকে! প্রথমে বলেছিলেন, আধ ঘণ্টা মুখোমুখি হয়ে দেখান প্রধানমন্ত্রী। কয়েক মাস পরে ধৈর্য হারিয়ে রাহুল নিজেই সময়ের অঙ্কটি কমিয়ে কুড়ি মিনিটে আনলেন। পরে হতাশ হয়ে ১৫ মিনিট।
যে কাজ এতদিন হল না, সেটি আজ হল কী করে? তোলপাড় সোশ্যাল দুনিয়ার দেওয়াল। এরইমধ্যে কংগ্রেস নিয়ে এল ভোটের ইস্তাহার। সে কী কাণ্ড? ইস্তাহার তো আগামিকাল ঘোষণা করবেন রাহুল। গতকাল রাত পর্যন্তও কংগ্রেস দফতরের শামিয়ানার কাজ শেষ হয়নি। এরমধ্যেই ইস্তাহার প্রকাশ? ক্লিক করে দেখা গেল, কংগ্রেস নয়, বিজেপির ইস্তাহার প্রকাশ হয়েছে। আর সেটি করেছে কংগ্রেসই। বিজেপি নেতারা আগেই জানিয়েছিলেন, চলতি সপ্তাহে তাঁদের ইস্তাহার প্রকাশের সম্ভাবনা কম। বিজেপি যে কাজে দেরি করছে, কংগ্রেস তাদের হয়ে সেরে ফেলল!
আর সেটি দেখেই বোঝা গেল, আজ সকাল থেকে হচ্ছেটা কী? আজ এপ্রিল-ফুল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এমন দিনে সাধারণত লোকেরা বলেন, ‘‘বোকা বানিও না।’’ কংগ্রেস স্লোগান তুলল, ‘‘মোদী বানিও না।’’ ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল মজা করে টুইট করলেন, তিনি নাকি একটি আয়না অর্ডার করে পাঠিয়েছেন সাত নম্বর লোক কল্যাণ মার্গের ঠিকানায়। যেখানে থাকেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটে প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ভূপেশ এ-ও লিখে দিলেন, ‘‘আপনার জন্য একটি আয়না পাঠালাম। লোক কল্যাণ মার্গের যে জায়গায় সবথেকে বেশি আপনার যাতায়াত, সেখানে আয়নাটি রাখুন। যাতে বেশিবার নিজের মুখ দেখতে পারেন আর নিজের আসল রূপ চিনতে পারেন।’’
এরপর কংগ্রেস বিজেপির যে ইস্তাহার নিয়ে এল, তার শীর্ষক: ‘এক ভারত, বেরোজগার ভারত’। নিবেদনে ‘ভারতীয় জুমলা পার্টি’। বিজেপির প্রতীক পদ্মফুলটি অবশ্য উল্টে রাখা হল। আর পাতায় পাতায় বিদ্রূপ করে ভরে দেওয়া হল নরেন্দ্র মোদীর ‘সম্ভাব্য’ প্রতিশ্রুতি। যা কি না এতদিনের রাহুলদেরই অভিযোগ। কংগ্রেসের নেতা মণীশ তিওয়ারি বললেন, ‘‘আজ পয়লা এপ্রিল। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে বিজেপি রোজই তো পয়লা এপ্রিল পালন করছে।’’
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের পাল্টা জবাব, ‘‘আসল এপ্রিল-ফুল তো করেছেন রাহুল গাঁধী। যে তিন রাজ্যে সম্প্রতি জিতেছেন, সেখানে দশদিনে কৃষকদের ঋণ মাফ করবেন বলেছিলেন। কিন্তু করেননি। ভোট-বিধি শুরুর আগেই তা বন্ধ করে দিয়েছে কংগ্রেস সরকার। তার উপর ব্যাঙ্ক এখন নোটিস দিচ্ছে চাষিদের।’’
এরই মধ্যে রাহুল আজ ফের টুইট করেন সন্ধ্যায়। জানান, ভাল নেতার হাতেই স্মার্ট সিটি তৈরি হয়। মেয়র এবং পারিষদদের পাঁচ বছরের মেয়াদ বেঁধে তাদের হাতেই এ ভার দেওয়া হবে। গত কয়েকদিন ধরেই ধাপে ধাপে এক-একটি করে ঘোষণা করছেন আর মোদীকে চাপে ফেলছেন রাহুল। আজ মোদীর স্বপ্ন দেখানো স্মার্ট সিটি রূপায়ণটিও কেড়ে নিলেন। আরও কী কী আছে তাঁর ইস্তাহারে, অপেক্ষা কাল দুপুর পর্যন্ত।