—ফাইল চিত্র।
একটা-দুটো পাতা নয়। আস্ত ডায়েরিটিই কব্জায়।
ভোটের মুখে নরেন্দ্র মোদীর ‘দুর্নীতিমুক্ত’ স্লোগান ভোঁতা করতে আজ এই দাবি জানাল কংগ্রেস। গত মাসের ২২ তারিখে কংগ্রেস সামনে নিয়ে এসেছিল কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পার ডায়েরির এক পাতার প্রতিলিপি। যেখানে ১৮০০ কোটি টাকা ঘুষের ফিরিস্তি ছিল বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। যার মধ্যে হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।
গোটা বিজেপি সে দিন ঝাঁপিয়ে পড়ে বলেছিল, সব ভুয়ো। দিল্লিতে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ থেকে কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পা— সবাই বলেছিলেন, সেই ডায়েরিতে বিজেপি নেতার কোনও স্বাক্ষরই নেই। এমনকি আয়কর দফতরও তড়িঘড়ি বিবৃতি দিয়ে বলে, আসলে ২০১৭ সালে কর্নাটকের কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমারের বিরুদ্ধে আয়কর হানা হয়। হানার সময় ডায়েরির একটি খোলা পাতার প্রতিলিপি দেন তিনি। দাবি করেন, হাতের লেখা ইয়েদুরাপ্পার। ফরেন্সিক বিভাগের কাছে তা পাঠানোও হয়। কিন্তু প্রতিলিপি বলে আসল পাতার সঙ্গে ইয়েদুরাপ্পার স্বাক্ষর যাচাই করা যায়নি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এমন এক বিতর্কের মধ্যে আজ আস্ত ডায়েরিটির ‘হদিশ’ দিল কংগ্রেস। দিল্লিতে এআইসিসি দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল একটি ভিডিয়োও দেখান। যেখানে দেখা যাচ্ছে, গোটা ডায়েরিটিই এক জনের হাতে। তাতে একের পর এক পাতা ওল্টাচ্ছেন। আর পাতায় পাতায় হিসেব লেখা কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে। ডায়েরিটি ২০১২ সালের।
কিন্তু এই ডায়েরিটি এখন কার কব্জায়? কপিল সিব্বল বলছেন, ‘‘খুব শীঘ্রই সেটি জানতে পারবেন। কিন্তু এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করতে পারেন সদ্য গঠিত লোকপাল। যে হেতু বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাই প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী থেকে বিজেপির সব কেন্দ্রীয় নেতাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। যে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিমুক্ত সরকারের স্লোগান দেন, তিনিও জবাব দিন। তবে সবার আগে ইয়েদুরাপ্পাকে গ্রেফতার করা উচিত।’’
বিজেপি বলছে, ভোটের সমময় আর কোনও বিষয় নেই বলেই পুরনো বিষয়কে বার বার খুঁচিয়ে তুলছে কংগ্রেস। এ সব সম্ভাব্য হারের হতাশা। যে ডায়েরির ভিডিয়ো আজ কংগ্রেস দেখিয়েছে, সেটির সব পাতাতে একই কালো কালিতে লেখা। কেউ রোজই একই কালিতে ডায়েরি লেখেন?
কিন্তু কংগ্রেসের এত আত্মবিশ্বাসের কী কারণ? ডায়েরি যদি সত্যিই তাদের কব্জায় থাকে, তা হলে সেটি সাংবাদিক সম্মেলনে দেখানো হল না কেন? কংগ্রেস বলছে, ‘‘ডায়েরিটি এখন কর্নাটক সরকারের হেফাজতে রয়েছে। কিন্তু যারা তদন্ত করবে, সেই আয়কর দফতর কিংবা ইডি নরেন্দ্র মোদীর অধীনে। ফলে একমাত্র লোকপালকে দিয়ে তদন্ত করানো উচিত। ডায়েরিও তখন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’