বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। ছবি: পিটিআই।
আয়ের হিসাবে বিজেপি যতই এগিয়ে থাকুক না কেন, সঞ্চয়ের হিসাব বলছে অন্য কথা। সেখানে সব রাজনৈতিক দলকে টেক্কা দিয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের খরচের যে হিসাব দিয়েছে বিএসপি, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে দিল্লির বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যে টাকা জমা রয়েছে তার পরিমাণ ৬৭০ কোটি। সেখানে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের সময় বিএসপি-র সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ৯৫ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা।
২০১৮-র ১৩ ডিসেম্বরের হিসাব বলছে, সঞ্চয়ের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সমাজবাদী পার্টি। তাদের সঞ্চয় ৪৭১ কোটি টাকা। ১৯৬ কোটি টাকা সঞ্চয়ে তৃতীয় স্থানে কংগ্রেস এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে টিডিপি। তাদের সঞ্চয় ১০৭ কোটি টাকা। সেখানে ৮২ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক সঞ্চয় নিয়ে পঞ্চম স্থানে ছিটকে গিয়েছে বিজেপি! অন্য দিকে, সিপিএম ও আম আদমি পার্টির সঞ্চয়ের পরিমাণ ৩ কোটি।
২০১৮-র ৬ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী বিএসপির সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ৬৬৫ কোটি টাকা। কিন্তু নভেম্বর-ডিসেম্বরে ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং তেলঙ্গানাতে বিধানসভা নির্বাচনের সময় দলের আয় হয়েছিল ২৪ কোটি। নির্বাচন শেষে দেখা যায় তাদের সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৭০ কোটিতে। অন্য দিকে, ওই চার রাজ্যের নির্বাচনের আগে এসপি-র নগদ সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ৪৮২ কোটি টাকা। কিন্তু নির্বাচনের পরে ১১ কোটি কমে সেই সঞ্চয় দাঁড়ায় ৪৭১ কোটিতে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তবে গত বছরের ২ নভেম্বর কর্নাটকে ভোটের পর নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া কংগ্রেসের সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল ১৯৬ কোটি। যদিও মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়— এই তিন রাজ্যের নির্বাচনে জয়ের পর দলের সঞ্চয়ের পরিমাণ কত সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে নতুন কোনও তথ্য দেয়নি কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: মোদীর বাক্স রহস্য! কী সরানো হল কপ্টার থেকে? সিসিটিভি ফুটেজের উত্তর মেলেনি এখনও
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত ডিসেম্বরে ছ’টি রাজনৈতিক দলের ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ্যে আনে নির্বাচনী ও রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে কাজ করা সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)। নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলি যে হিসাব পেশ করে, সেটাই প্রকাশ করে এই সংস্থা। রাজনীতি ও নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনা, কালো টাকার ব্যবহার ও দুর্নীতি কমাতে ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ-এর (সারা দেশের প্রায় ১২০০টি সংগঠনের মিলিত সংস্থা) সঙ্গে কাজ করে বেসরকারি ও অরাজনৈতিক সংস্থা এডিআর।
এডিআর-এর সেই তালিকায় দেখা গিয়েছে ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে সবচেয়ে বেশি আয় বিজেপির, ১০৩৪ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষেও আয়ের নিরিখে শীর্ষে ছিল বিজেপি, ১০২৭ কোটি টাকা। এই হিসেবে বিজেপির আয় কমেছে প্রায় সাত কোটি টাকা।
আয়ের নিরিখে বিজেপির পরে দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে সিপিএম। তাদের আয় হয়েছে ১০৪.৮৪৭ কোটি টাকা। আর বামপন্থী এই দলের খরচ হয়েছে ৮৩.৪৮২ কোটি টাকা। ৫১.৬৯৪ কোটি টাকা আয় হয়েছে বিএসপি-র। মায়বতীর দল খরচ করেছে ১৪.৭৮ কোটি।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দলগুলির ৮৭ শতাংশ আয় এসেছে দানের মাধ্যেমে। যার মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে শুধু নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমেই বিজেপির লাভ হয়েছে ২১০ কোটি টাকা।