মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় থেকে ২ কোটি উদ্ধার অরুণাচলে

তিনটি গাড়িতে তল্লাশি করে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বেশি উদ্ধার ধরেন দুই মহিলা অফিসার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লখিমপুর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

টাকা-কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। প্রতীকী ছবি।

অরুণাচলের পাসিঘাটে আজ সকালে সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী। আর তার দশ ঘণ্টা আগে মাঝরাতে সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের গাড়ি তল্লাশি করে ধরা পড়ল নগদ প্রায় দু’কোটি টাকা। মোদীর সভা শুরুর আগেই গোটা ঘটনাটি দিল্লির দরবারে তুলে কংগ্রেস বলল— ‘চৌকিদারই চোর’। টাকা দিয়ে ভোট কেনার সব থেকে বড় ঘটনা। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিক নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

গত কাল রাত বারোটা নাগাদ তিনটি গাড়িতে তল্লাশি করে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার বেশি উদ্ধার ধরেন দুই মহিলা অফিসার। এক জন নির্বাচন কমিশনের খরচের উপরে নজরদারি করা পর্যবেক্ষক সমৃতা কৌর গিল। অন্য জন পাসিঘাটের জেলাশাসক কিন্নি সিংহ। ফ্লাইং স্কোয়াড, পুলিশ ও কমিশনের পর্যবেক্ষকরা সিয়াং অতিথিশালায় হানা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর কনভয়ের গাড়িগুলিতে তল্লাশি করে। অতিথিশালায় মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু নিজেও তখন হাজির ছিলেন। আজ সকালেই বিষয়টি দিল্লির নজরে এনে কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ও পেমা খান্ডুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক কমিশন। মুখ্যমন্ত্রী, প্রদেশ সভাপতি ও এ বারের প্রার্থী তাপির গাওয়ের কনভয়ের গাড়িতে মোদীর সভা ভরানোর জন্য টাকা আনা হচ্ছিল। পেমা পদত্যাগ করুন, দুই প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করুক কমিশন। কেন প্রায় এগারো ঘণ্টা পরেও কমিশনের নিদ্রাভঙ্গ হয়নি?’’

ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্বকেও আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি দিতে বলেন। পেমা জানান, ‘‘এক প্রার্থীর গাড়িতে টাকা পাওয়া গিয়েছে। দায়িত্ব তাঁর। টাকার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। প্রদেশ সভাপতি বিষয়টি দেখছেন।’’ আর প্রদেশ সভাপতি গাও বলছেন, ‘‘টাকার উৎস প্রার্থী বলতে পারবেন। হারের ভয়ে কংগ্রেস হেনস্থা করছে।’’ আসলে যুব কংগ্রেসের দেওয়া খবরের ভিত্তিতেই ওই গাড়িগুলিতে তল্লাশি করা হয়। আর মেবো বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ডেংগি প্রেমে বলেন, টাকা তাঁর ছেলের। তিনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কমিশনের নোটিসও গিয়েছে ডেংগির কাছে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গোটা ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর মতো বড় নেতাদের আড়াল করতে অনেকটাই সমর্থ হওয়ার পর হাঁফ ছাড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। দিল্লিতে বিজেপি দফতরে নির্মলা সীতারামনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘এর আগে ‘জিরো লস থিওরি’ নেতা (কপিল সিব্বল) আমদাবাদে টাকা লেনদেন নিয়ে এমন একটি অভিযোগ করেছিলেন, যা দাঁড়ায়নি!’’ বিকালে এলেন অরুণ জেটলি। অরুণাচল নিয়ে কিছু বললেন না। কিন্তু রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধীরা দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের নিজেদের ফার্ম হাউস ভাড়া দিয়ে বকলমে শিল্পপতিদের সাহায্য করেছেন, সম্পত্তি বাড়িয়েছেন— এমন অভিযোগ করলেন। যা নিয়ে বিজেপি এর আগে একাধিক বার সাংবাদিক সম্মেলন করে ফেলেছেন।

কংগ্রেস বলছে, অরুণাচলের ঘটনায় ফেঁসে গিয়ে এখন ফের বস্তা-পচা বিষয় সামনে আনলেন অরুণ জেটলি। সেটি নিয়ে আবার ব্লগও লিখলেন ‘ব্লগ-মন্ত্রী’। রাহুল গাঁধী আজ অরুণাচলের পাশেই অসমে জনসভা করছিলেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর অন্য দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুললেও নীরব থাকলেন পাসিঘাট নিয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement