আখলাক খুনে অভিযুক্তরা যোগীর সভার প্রথম সারিতে। উত্তরপ্রদেশের বিসারায়। ছবি: সংগৃহীত।
সেই বিসারা গ্রাম। সেই গ্রেটার নয়ডা। সেখানেই রবিবার সভা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
যে বিসারাতে বাড়িতে গোমাংস রাখার ‘শাস্তি’ দিতে ২০১৫ সালে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল দাদরির মহম্মদ আকলাখকে। যে আখলাক হত্যা নিয়ে দেশ জুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। যাঁদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল, তাঁরা কিন্তু জামিনে মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকাতেই। অথচ ঘটনার পর বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছিল আখলাকের পরিবারকে। এ বার সেই বিসারাতেই যোগীর সভায় ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত বিশাল রানা-সহ চার জনকে একেবারে সামনের সারিতে দেখা গেল। আর মঞ্চ থেকে জনতার উদ্দেশে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘এখানে কী ঘটেছিল মনে আছে তো?’
বিজেপি প্রার্থী মহেশ শর্মার সমর্থনে ওই দিন বিসারায় প্রচারে গিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। সেখানে গিয়ে আখলাক হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। মানুষকে সে দিনের ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কী ভাবে সে দিন ভাবাবেগকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল সে অভিযোগ তুলে সমাজবাদী পার্টিকেও আক্রমণ করেন যোগী। তিনি বলেন, “সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি সরকার জাতপাতের রাজনীতির মাধ্যমে বিভাজনের নীতি চালিয়েছে। দু’দলই তাদের পরিবারের উন্নতির জন্য কাজ করেছে। সন্তুষ্টির রাজনীতি চালিয়েছে।”
আরও পড়ুন: অসমে ৭০ হাজার চিহ্নিত অনুপ্রবেশকারী উধাও! সুপ্রিম কোর্টে তথ্য দিল রাজ্য সরকার
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যোগী আরও বলেন, “নরেন্দ্র মোদী ২০১৪-য় দেশের ক্ষমতায় আসার পর কোনও ব্যক্তি, পরিবার বা জাতের ভিত্তিতে কাজ করেনি। গ্রাম, গরিব, যুব সম্প্রদায়, নারী, কৃষক এবং সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ করেছেন।”
আগের সরকারের আমলে রাজ্যে কী ভাবে বিশৃঙ্খলার পরিবেশে তৈরি হয়েছিল এ দিন সেটাও মনে করিয়ে দেন যোগী। তাঁর অভিযোগ, আগের সরকারের আমলে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গা হত। কিন্তু পদক্ষেপ করা হত শুধু এক তরফা ভাবেই। তবে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর সে সব দিন গিয়েছে। রাজ্যে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। বিভিন্ন বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন যোগী।
বিসারার ঘটনা ফের উল্লেখ করে বলেন, “গত দু’বছরে তাঁর সরকারের অধীনে রাজ্যের কোথাও কি বিসারার মতো ঘটনা কি ঘটেছে? এখন কি মা-বোনদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হয়? না, এখন আর নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হয় না।” যোগীর দাবি, তাঁর সরকার রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে। সন্তুষ্টি বা জাতপাতের রাজনীতি নয়, তাঁর সরকার ২৩ কোটি রাজ্যবাসীর উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।