(বাঁ দিক থেকে) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং মণীশ সিসৌদিয়া। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে ৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৮টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। ২২টিতে জয়ী হয়েছে আপ। কংগ্রেস খাতাই খুলতে পারেনি।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বিকেল ৪টে ১৫ নাগাদ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দিল্লিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদু সংখ্যা’ ছুঁয়ে ফেলেছে বিজেপি। ৩৮টি আসনেই জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। আপ জিতেছে ১৭টি আসন। এখনও ১৫টি আসনের গণনা চলছে।
দিল্লির ভোটের ফল দেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন, ‘‘জনতাই সর্বশক্তিমান! উন্নয়ন এবং সুশাসন জিতল। দিল্লির সকল ভাই-বোনকে আমার শুভেচ্ছা। দিল্লিতে সব রকমের উন্নয়নের জন্য আমরা চেষ্টা করব, এটা আমার গ্যারান্টি। মানুষের জীবন উন্নত করার চেষ্টা করব। দিল্লি যাতে সারা ভারতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, আমরা সেই চেষ্টাও করব। বিজেপির সকল কর্মীর জন্য আমি গর্বিত।’’
কেজরীওয়াল ভিডিয়োবার্তায় বলেছেন, ‘‘দিল্লির ভোটের ফল প্রকাশিত। জনতার এই রায় আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। বিজেপিকে জয়ের জন্য অভিনন্দন। যে আশা নিয়ে মানুষ ওদের ভোট দিয়েছেন, আশা করি ওরা তা পূরণ করব। গত ১০ বছরে আমরা অনেক কাজ করেছি। দিল্লিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল— সব ক্ষেত্রে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার চেষ্টা করেছি। রাজধানীর পরিকাঠামোগত উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। এখন দিল্লির মানুষের রায় অনুযায়ী আমরা এখানে গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। সমাজসেবা এবং মানুষের হিতার্থে কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকব। রাজনীতিতে আমরা কোনও লাভের আশা নিয়ে আসিনি। রাজনীতি হল মানুষের জন্য কাজ করার মাধ্যম। সেই কাজ আমরা করে যাব। আপের সব কর্মীকে অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ। ওঁরা এই নির্বাচনের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন।’’
দিল্লির ভোটের ফলাফল দেখে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম প্রধান দুই শরিক কংগ্রেস এবং আপকে কটাক্ষ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘আরও লড়ো নিজেদের মধ্যে।’’ এর সঙ্গে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ এবং ব্যঙ্গাত্মক ভিডিয়ো দিয়েছেন তিনি। তাতে এক জনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মন ভরে লড়াই করো। একে অপরকে একেবারে শেষ করে দাও।’’
গ্রেটার কৈলাসে পরাজিত আপের সৌরভ ভরদ্বাজ। প্রথমে ওই কেন্দ্রে বিজেপির শিখা রায় পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে বাজিমাত করেন তিনি।
ওখলা কেন্দ্রে এখনও ভোটগণনা চলছে। এগিয়ে আছেন আপ প্রার্থী আমানাতুল্লা খান। এই কেন্দ্রে বিজেপির মণীশ চৌধরি তৃতীয় স্থানে। দ্বিতীয় মিম।
কালকাজি কেন্দ্র থেকে শেষ পর্যন্ত জিতলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা। শেষ রাউন্ড পর্যন্ত রমেশ বিধুরীর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলেছে তাঁর।
দিল্লির শকুর বস্তী কেন্দ্র থেকে পরাজিত হয়েছেন আপ নেতা সত্যেন্দ্র জৈন। বিজেপির কর্নেল সিংহ ওই কেন্দ্রে জিতে গিয়েছেন।
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পুত্র সন্দীপ দীক্ষিত নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনিও পরাজিত।
আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে হেরে গিয়েছেন। তাঁকে হারালেন বিজেপির প্রবেশ সিংহ। তাঁদের ভোটের ব্যবধান ৩,১৮২।
জংপুরা কেন্দ্র থেকে মণীশ সিসৌদিয়া পরাজিত হয়েছেন। হার স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। বিজেপির জয়ী প্রার্থী তরবিন্দর সিংহের সঙ্গে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ৬০০-র কাছাকাছি।
২৭ বছর পর দেশের রাজধানীতে প্রত্যাবর্তনের পথে বিজেপি। ১৯৯৮ সালে শেষ বার তারা দিল্লির মসনদে ছিল। শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। তার পর কংগ্রেস দিল্লির ক্ষমতা দখল করে। ২০১৩ সালে প্রথম বার ক্ষমতায় আসে আপ।
দিল্লিতে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে কে হবেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? শনিবার বেলার দিকে সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হলে দিল্লি বিজেপির প্রেসিডেন্ট বীরেন্দ্র সচদেবা বলেন, ‘‘দিল্লির মানুষ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বকে দেখে ভোট দিয়েছেন। ওঁদের যন্ত্রণা আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি। বিজেপি থেকেই কেউ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তবে কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সম্পূর্ণ ফলাফল দেখে দল সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’’
জংপুরা কেন্দ্রে প্রায় চার হাজার ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন মণীশ সিসৌদিয়া। চতুর্থ রাউন্ডের গণনা চলছে।
পঞ্চম রাউন্ডের গণনা শেষ নয়াদিল্লি আসনে। প্রবেশ সিংহের চেয়ে ২২৫ ভোটে পিছিয়ে পড়েছেন কেজরীওয়াল।
এখনও শূন্যে আটকে কংগ্রেস। দিল্লির বিধানসভা ভোটে ৭০টির মধ্যে এই মুহূর্তে কোনও আসনেই তাদের প্রার্থী এগিয়ে নেই।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আতিশী আবার পিছিয়ে গিয়েছেন। কালকাজি কেন্দ্রে তাঁকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী রমেশ বিধুরী।
ওখলা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী মণীশ চৌধরি এগিয়ে। আপের আমানাতুল্লা খানকে পিছনে ফেলেছেন তিনি।