হিসেব কষেই সনিয়ার ভোজে নেই বামেরা

সাত বছর আগের জুলাই মাসে যখন পলিটব্যুরো ইউপিএ-সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তখন সীতারাম ইয়েচুরি বিদেশে। সাত বছর পরে সেই জুলাই মাসেই গত কাল সনিয়া গাঁধীর ইফতার পার্টি কার্যত বয়কট করল সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

সাত বছর আগের জুলাই মাসে যখন পলিটব্যুরো ইউপিএ-সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তখন সীতারাম ইয়েচুরি বিদেশে।

Advertisement

সাত বছর পরে সেই জুলাই মাসেই গত কাল সনিয়া গাঁধীর ইফতার পার্টি কার্যত বয়কট করল সিপিএম। ঘটনাচক্রে এখনও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বিদেশে। তিনি এখন লন্ডনে।

স্বাভাবিক ভাবেই সিপিএমের অন্দরমহলে তুমুল জল্পনা, সীতারাম ইয়েচুরির অজ্ঞাতেই কি সনিয়ার ইফতার বয়কটের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিলেন পলিটব্যুরোর বাকি সদস্যরা? জল্পনার কারণ, সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে পর্যন্ত ইয়েচুরি কংগ্রেসের প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন বলেই পরিচিত ছিলেন। প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট ও তাঁর অনুগামীরা সেই তুলনায় অনেক বেশি কংগ্রেস-বিরোধী এবং কট্টর মনোভাবাপন্ন বলে পরিচিত।

Advertisement

গত কাল সনিয়া গাঁধীর ইফতারে ইয়েচুরিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমও। অশোক হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলের ইফতারে সনিয়া গাঁধী যে টেবিলে বসেছিলেন, সেই টেবিলেই সিপিএমের প্রতিনিধির বসার ব্যবস্থা করেছিলেন অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের নেতারা।

পলিটব্যুরো সূত্রের দাবি, ইয়েচুরির সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেলিম যাবেন না। কারণ সনিয়ার ইফতার পার্টি সামাজিক অনুষ্ঠান নয়। পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এর আয়োজন। সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, কয়েক মাস পরেই বিহারের নির্বাচন। বামেরা ওই নির্বাচনে নীতীশ-লালু-কংগ্রেসের জোটে না গিয়ে আলাদা ভাবে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বছর ভোট রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলেও। পশ্চিমবঙ্গে গৌতম দেবের মতো কিছু নেতা মনে করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে লড়তে হলে কংগ্রেসকে পাশে দরকার। কিন্তু কেরলে এই কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে উৎখাত করেই ফের ক্ষমতায় আসার জন্য লড়ছে সিপিএম। এই অবস্থায় কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করতে গেলে দলের নিচু তলার কর্মী ও সমর্থকদের কাছে ভুল বার্তা যেত বলে মনে করছেন সিপিএম নেতারা।

আলিমুদ্দিনের নেতারা বলছেন, রাজ্য রাজনীতির দিক দিয়ে দেখলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। সনিয়ার ইফতারে গিয়ে সেলিম তৃণমূল নেতার পাশে বসে ফিরনি খাচ্ছেন— এমন দৃশ্যে রাজ্যেও অস্বস্তি তৈরি হতো। তাঁদের বক্তব্য, ইফতার একটি পবিত্র অনুষ্ঠান। তার সামাজিক দিকও রয়েছে। আগেও রাজনৈতিক নেতারা সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায় ইফতারের আয়োজন করতেন। কিন্তু এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইফতার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের মঞ্চ হয়ে উঠেছে। সিপিএমের নেতারা তাই সচেতন ভাবেই ইফতার এড়িয়ে যাচ্ছেন। আলিমুদ্দিনের এক নেতা বলেন, ‘‘আমরা কলকাতায় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অশোক ঘোষের ইফতারেও যাইনি। সিপিআই-ও অনুপস্থিত ছিল। অথচ সেখানে তৃণমূল হাজির ছিল।’’ একই ভাবে সনিয়ার ইফতারে আমন্ত্রণ পেলেও যাননি সিপিআইয়ের ডি রাজা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement