নিহত কাশ্মীরি পণ্ডিতের পরিবারের কন্যা। ছবি পিটিআই।
কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার চৌধুরীগুন্দ গ্রাম ছেড়ে গত কয়েক দিনে সাতটি পণ্ডিত পরিবার জম্মুতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। পণ্ডিতদের লক্ষ্য করে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী হামলায় তাঁদের পরিবারগুলি তটস্থ হয়ে থাকলও সাহসে ভর করে গ্রামে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডলি কুমারী। এত দিন তিনিই ছিলেন গ্রামের শেষ কাশ্মীরি পণ্ডিত। তবে ‘ভয়ের বাতাবরণে’ সেই ডলিও গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেন জম্মুর আস্তানায়।
যাওয়ার আগে তাঁর সুবিশাল আপেল বাগান দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়ে গেলেন মুসলমান পড়শিদেরই। মুসলমান প্রতিবেশীরাও জানালেন, কোনও আপেল নষ্ট হতে দেবেন না তাঁরা। বরং, সব আপেল বাজারে বিক্রি করে তার অর্থ তুলে দেবেন ডলির হাতে।
গত ১৫ অক্টোবর এই গ্রামেই প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয় কাশ্মীরি পণ্ডিত পুরাণকৃষ্ণান ভট্টকে। শোপিয়ান জেলারই আর এক গ্রাম চটিগামে খুন হন আর এক কাশ্মীরি পণ্ডিত। তার পরই এই দুই গ্রাম থেকে মোট ১১টি কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবার জম্মুর উদ্দেশে রওনা দেয়।
একটি সংবাদ সংস্থাকে ডলি বলেছেন, “সাহস করে থেকেই যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু চোখের সামনে খুন হতে দেখছি। এত ভয়ের মধ্যে কি বাঁচা যায়?” তবে পরিস্থিতি উন্নতি হলে তিনি গ্রামে ফিরে আসবেন বলেও জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কে নিজের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে চায় বলুন? আবার এই গ্রামেই ফিরতে চাই।” ডলির পড়শি গুলাম হাসান বলছেন, “এ সব কিছুই হওয়ার ছিল না। আমরা শান্তিতেই গ্রামে থাকতাম।” প্রশাসনের তরফে অবশ্য ভয়ের কারণ গ্রাম ছাড়ার ঘটনাকে সত্য বলে স্বীকার করা হয়নি। প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ফসল কাটার মরসুমে অনেক পরিবারই জম্মুতে ছুটি কাটাতে যায়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই কর্তা। তবে গত এক বছরের মধ্যে পাঁচ জন কাশ্মীরি পণ্ডিত খুন হয়ে যাওয়ায় উপত্যকায় থাকার সাহস দেখাতে পারছেন না ডলিরা।