সোমবারের হামলার পর কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনীতে অনন্তনাগের বাতেঙ্গু। ছবি: পিটিআই।
অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপর হামলার পিছনে স্থানীয় লস্কর-ই-তইবা নেতা আবু ইসমাইলেরই হাত রয়েছে বলে নিশ্চিত করলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী সত্ত্বেও সোমবারের হামলার পিছনে লস্কর নাকি হিজবুল মুজাহিদিনের হাত রয়েছে এ নিয়ে গোড়া থেকেই ধন্দে ছিলেন গোয়েন্দারা। তদন্তের সূত্র ধরে এ বার নির্দিষ্ট করে লস্করের নামই উঠে এল। গোয়েন্দা অফিসারদের কথায়, গোটা হামলারই ছক কষেছিল দক্ষিণ কাশ্মীরে সক্রিয় লস্কর-ই-তইবার অন্যতম মাথা এই ইসমাইল। এই জঙ্গি নেতাকেই এখন হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: রাতভর গুলির লড়াই, বদগামে সেনার গুলিতে খতম তিন হিজবুল জঙ্গি
কে এই ইসমাইল?
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, দক্ষিণ কাশ্মীরে লস্কর-ই-তইবার স্থানীয় কম্যান্ডার মহম্মদ আবু ইসমাইল। বছর ছাব্বিশের এই জঙ্গি নেতা স্থানীয় লস্কর প্রধান আবু দুজানার উত্তরসূরি। দুজানা এবং ইসমাইল দু’জনেই পাকিস্তানের বাসিন্দা এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ইসমাইল দীর্ঘদিন ধরেই অনন্তনাগের ওই এলাকায় সক্রিয়। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, সোমবারের হামলায় ইসমাইলকে সঙ্গ দিয়েছিল আরও তিন-চারজন স্থানীয় জঙ্গি। তাঁর কথায়, ‘‘ইসমাইল এবং তার আরও দুই সঙ্গীকে আমরা শনাক্ত করেছি। সেই সব লোকেদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে যারা এই জঙ্গি কার্যকলাপে সহযোগিতা করেছে এবং অস্ত্রের যোগান দিয়েছে।’’ তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে এবং খুব দ্রুত ইসমাইল ও তার সঙ্গীদের খুঁজে বার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তদন্তকারী অফিসারদের কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই উপত্যকায় স্থানীয় যুবকদের মগজধোলাইয়ের কাজ করছে ইসমাইল। সম্প্রতি উপত্যকায় নতুন বাহিনী তৈরির কাজ চালাচ্ছিল লস্কর। স্থানীয় যুবকদের এই বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেয় সে। সেই সূত্র ধরেই উপত্যকার স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আরও বাড়ে। সোমবারের হামলার পিছনেও এই স্থানীয়দেরই কাজে লাগিয়েছিল সে। অফিসারেরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কাশ্মীরে এখনও পর্যন্ত মোট ৩০ জন স্থানীয় যুবক এই বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। উত্তর কাশ্মীরে যোগ দিয়েছে ৮০ জন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই পাকিস্তানের বাসিন্দা। অনন্তনাগে ক’দিন আগেই লস্করের বড়সড় ঘাঁটি শেষ করতে সফল হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। তার শোধ তুলতেই লস্কর তীর্থযাত্রীদের নিশানা করা হয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
পাশাপাশি, সোমবারের হামলার পিছনে হিজবুল গোষ্ঠীর হাত থাকার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ইসমাইল স্থানীয় হিজবুল কম্যান্ডারদেরও সহযোগিতা পেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।