কারখানায় নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এই যুক্তি দিয়ে কর্মীদের ওভারটাইমের ঊর্ধ্বসীমা দ্বিগুণ করে কারখানা আইন সংশোধন করতে চেয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু কংগ্রেস-বাম-তৃণমূল-সপা ও অন্যান্য দলের এককাট্টা বিরোধিতায় পিছিয়ে যেতে হল কেন্দ্রকে। রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে হোঁচট খেল মোদী সরকারের ‘শ্রম সংস্কার’। বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনেও কেন্দ্র বিলটি পাশ করাতে পারল না।
বিরোধীরা একে শ্রম সংস্কারের বদলে শ্রমিকদের শোষণ আখ্যা দিয়েছে। কারণ কারখানা আইনে সংশোধন করে প্রতি তিন মাসে ওভারটাইমের ঊর্ধ্বসীমা ৫০ থেকে ১০০ ঘণ্টা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এমনকী, কারখানায় অতিরিক্ত
কাজের চাপ থাকলে বা জনস্বার্থে রাজ্য সরকার ১২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত ওভারটাইমের ছাড়পত্র দিতে পারে। শ্রমমন্ত্রী বন্দারু দত্তাত্রেয়র যুক্তি, এর ফলে শ্রমিকরা বেশি আয়ের সুযোগ পাবেন। কারখানাগুলিও প্রয়োজনে বেশি উৎপাদন করতে পারবে। কিন্তু শ্রমিকদের ‘স্বার্থ রক্ষা’-য় দিনে ওভারটাইমের সর্বোচ্চ সীমা ১০ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসের মধুসূদন মিস্ত্রি, সিপিএমের তপন সেনরা গত কালই রাজ্যসভায় এই বিল নিয়ে আলোচনায় আপত্তি তোলেন। তাঁদের মতে, এর সুযোগ নিয়ে শ্রমিকদের বেশি খাটিয়ে নেওয়া হবে। মোদী সরকার শ্রমিকদের যন্ত্রের পর্যায়ে নামিয়ে আনছে। তাঁদের প্রশ্ন, সার্বিক ভাবে কারখানা আইন ঢেলে সাজার প্রক্রিয়া চলছে। তার মধ্যে কেন আইনে সংশোধন করা হচ্ছে! বিলে বিরোধীরা পাল্টা সংশোধনী পাশ করাবেন বলেও সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। বাধ্য হয়ে গত কাল বিলটি পাশ করানোর চেষ্টা করেনি সরকার। আজ সকালেও মন্ত্রীরা বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা সুর নরম করেননি। রাজ্যসভায় বিরোধীদের সংশোধনী মেনে নিতে হলে সরকারের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না দেখে শেষ দিনে আর বিল নিয়ে এগোয়নি সরকার। সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলেন, ‘‘আগামী অধিবেশনের আগে এ বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা হবে।’’ কিন্তু সিটু-নেতা তপন সেন জানিয়ে দেন, ‘‘এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নই নেই।’’