পিতার শিবির ছেড়ে পুত্রের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আগেই। যাদব কুলে অভ্যুত্থানের দিনে পুত্রের জোরেই পিতার ফরমান অগ্রাহ্য করছেন কিরণময় নন্দ!
বাংলায় বাম জমানার পতনের পরে মুগবে়ড়িয়ার পুরনো বিধায়ককে গোমতীর তীরে নিয়ে গিয়ে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদবই। কিন্তু কালক্রমে কিরণময়বাবু বুঝেছেন, অখিলেশের হাতেই সমাজবাদী পার্টির ভবিষ্যতের ভার তুলে দেওয়া সময়ের দাবি। তাই আর্যাবর্তের ‘নেতাজি’কে ছে়ড়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মৎস্যমন্ত্রী। লখনউ থেকে রবিবার তিনি আনন্দবাজারকে সাফ জানাচ্ছেন, জরুরি জাতীয় কনভেনশন ডেকে অখিলেশকে সমাজবাদী পার্টির সভাপতি নির্বাচন করে তাঁরা ভুল কিছু করেননি। প্রায় গোটা দলের জনপ্রতিনিধিরাই যেখানে অখিলেশের সঙ্গে, সেখানে সম্মেলন ডেকে ‘বিদ্রোহ’ করার দায়ে ‘নেতাজি’র বহিষ্কারের ঘোষণার কোনও মূল্য নেই বলেই কিরণবাবুর দাবি।
লখনউয়ে এ দিনের সম্মেলন ডেকেছিলেন রামগোপাল যাদব। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার দায়িত্ব ছিল সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সহ-সভাপতি কিরণবাবুর। দল-বিরোধী কাজের দায়ে সম্মেলনের পরেই কিরণবাবু এবং আর এক বর্ষীয়ান নেতা নরেশ অগ্রবালকে বহিষ্কারের ঘোষণা করেন মুলায়ম। শাস্তি ঘোষণা হয় রামগোপালের জন্যও। কিন্তু কিরণবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘দলের ২২৬ জন বিধায়কের মধ্যে ২০৩ জন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। দলের ৯৫% সাংসদও হাজির ছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক, সাংসদ ও সম্মেলনের প্রতিনিধিরা অখিলেশকে সভাপতি বেছে নিয়েছেন। এর মধ্যে অবৈধ কাজের কী আছে?’’
কিরণবাবু জানাচ্ছেন, যাদব কুলের পারিবারিক কলহের জেরে দল সম্পর্কেই মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছিল। সে সবের অবসান ঘটিয়ে অখিলেশের নেতৃত্বে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করাই তাঁদের এখন লক্ষ্য। কিরণবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের এখন একটাই কথা। অখিলেশের নেতৃত্বে রাজ্যে ফের সমাজবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রার্থী বাছাইও প্রায় হয়ে গিয়েছে। আমরা দ্রুত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে চাই।’’ মুলায়ম যা-ই বলুন, বিধানসভা ভোটে তাঁরা যে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা শুরু করতে চান, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান এই নেতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস আগ্রহী থাকলে শীঘ্রই ওদের সঙ্গে কথা বলা হবে। এই নির্বাচনে জয়ই এখন একমাত্র লক্ষ্য।’’