অভিযুক্ত প্রেমিক রাজেশ। প্রেমিকার স্বামীর দেহ পুঁততে ঘরের মেঝে খুড়েছিলেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত।
খতম করে দেব, না কি ছেড়ে দেব? প্রেমিকার কাছে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন প্রেমিক। প্রেমিকার কাছ থেকে অনুমতি মিলতেই তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে খুন করলেন এক যুবক। ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের গুজৈনি গ্রামের মায়াপুরম বস্তি এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সঞ্জয়। দুই সন্তান এবং স্ত্রী সুমনকে নিয়ে মায়াপুরম বস্তি এলাকায় থাকতেন। সঞ্জয় দাদানগরে একটি প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী সুমনও অন্য একটি কারখানায় কাজ করেন। সেই কাজের সুবাদে রাজেশ নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সঞ্জয় এই সম্পর্কের কথা টের পাননি। তবে রাজেশকে তিনি ভাল ভাবেই চিনতেন।
সুমন এবং রাজেশের সম্পর্কের মাঝে কাঁটা হয়ে উঠছিলেন স়ঞ্জয়। তাই সেই কাঁটা সরাতেই দু’জনে মিলে ছক কষেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সঞ্জয়কে নিজের বাড়িতে ডাকেন। দু’জনে মিলে মদ্যপান করেন। নেশায় বেসামাল হয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয়। সেই সময় সুমনকে ফোন করেন রাজেশ। তাঁকে ফোন করে বলেন, “সঞ্জয় নেশায় বুঁদ হয়ে রয়েছে। ওকে মেরে দেব, না কি ছেড়ে দেব।” ফোনের ও পার থেকে প্রেমিকা সুমনের অনুমতি মিলতেই আর দেরি করেননি রাজেশ। সঞ্জয়কে কুপিয়ে খুন করেন। তাঁর দেহ ঘরের মধ্যে পুঁতে দেওয়ার জন্য আগে থেকেই বেশ কিছু সরঞ্জাম ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলেন। ঘরের মেঝে খোঁড়াও শুরু করেছিলেন। কিন্তু যে বাড়িতে সঞ্জয় ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিকের কন্যা বার বার ওই ঘরের সামনে দিয়ে যাতায়াত করায়, মেঝেতে দেহ পুঁতে রাখার বিষয়টি বাতিল করেন। তার পর অন্ধকার নামতেই সঞ্জয়ের দেহ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিয়ে আসেন।
সঞ্জয়ের বাবা তুলারাম পুলিশকে জানিয়েছেন, পুত্রের খোঁজ নেওয়ার জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর পুত্রবধূকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু পুত্রবধূ তাঁকে জানান, সঞ্জয় রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তুলারাম ভেবেছিলেন রাগ কমলে হয়তো পুত্র আবার ফিরবে। তাই আবার ৩০ সেপ্টেম্বর পুত্রবধূকে ফোন করেন। তখনও তিনি জানান, সঞ্জয় ফেরেননি। এর পরই একটু সন্দেহ হয় তুলারামের। তিনি পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। শ্বশুর পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন জানতে পেরে, সঞ্জয়ের স্ত্রীও পুলিশের কাছে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তদন্তে নেমে পুলিশের সুমনের উপর সন্দেহ হয়। তাঁর ফোনের তালিকা বার করা হয়। সেখান থেকে রাজেশের ফোন নম্বর পায়। এর পরই রাজেশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় খুনের বিষয়টি স্বীকার করেন রাজেশ। এর পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সুমনকেও নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তবে রাজেশের দেহ এখনও উদ্ধার হয়নি।