সংঘর্ষবিরতি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিল এনএসসিএন খাপলাং গোষ্ঠী। শীর্ষ নেতা এস এস খাপলাংয়ের নিষেধ না মেনে, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করায় দলীয় মন্ত্রী ওয়াংতিং কন্যাক ও তার সচিব টি টিখাককে বহিষ্কারও করা হল।
১৯৮০ সালে গঠিত এনএসসিএন বাহিনীতে প্রথম ভাঙন শুরু হয় ১৯৮৮ সালে। ইসাক চিসি সু ও থুইংলেং মুইভার বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে পৃথক হন খাপলাং। তখন থেকেই তার প্রধান দফতর মায়ানমারের সাগায়িং। সেখানে এনডিএফবি, আলফা নেতাদেরও তিনি আশ্রয় দিয়েছেন। ২০১০ সালে খাপলাং বাহিনী দু’ভাগ হয়ে যায়। কিতোভি জিমোমি এবং খুলে কন্যাক নামে দুই ঘনিষ্ঠ নেতা খাপলাংয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তাদের সদর দফতর হয় ডিমাপুরের খেহয় শিবির। আইএম বাহিনীর সদর দফতর ডিমাপুরের হেব্রন শিবির।
খাপলাং গত বছর মায়ানমার সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ও তার শিবিরে ভারত বিরোধী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করায় নয়াদিল্লি আপত্তি তোলে। এ বছর ২৮ এপ্রিল খাপলাং বাহিনীর সঙ্গে ভারত সরকারের সংঘর্ষবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আশঙ্কা ছিল, ভারত সরকার তা নবীকরণ করবে না। খাপলাং বাহিনী নাগাল্যান্ড ও অরুণাচলের শিবিরগুলি ফাঁকা করতে শুরু করে। নাগাল্যান্ডে একের পর এক নাশকতাও ঘটাতে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার খাপলাং বাহিনীর অন্যতম প্রধান নেতা ও খাপলাং সরকারের (প্রতিটি নাগা জঙ্গি সংগঠনের নিজেদের সমান্তরাল সরকার রয়েছে। সেগুলিতে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও বিধায়ক থাকেন) মন্ত্রী ওয়াংতিং, নাগা সংঘর্ষবিরতি তদারদ গোষ্ঠীর সঙ্গে ডিমাপুরের চুমুকেডিমায় বৈঠক করেন। তিনি জানান, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। খাপলাং বাহিনী শান্তি চায়। তাই সংঘর্ষবিরতি চালাতে আগ্রহী। ভারত সরকারকে তা জানানো হয়েছে। এর পরই কন্যাক ও তার সচিবকে বহিষ্কার কথা ঘোষণা করেন খাপলাং। তিনি জানান, তারা সংঘর্ষবিরতি চুক্তি নবীকরণ করবেন না। কন্যাক ও টিখাক এখন নতুন দল গড়বেন, না খুলে-কিতোভি গোষ্ঠীতে যোগ দেবেন তা স্পষ্ট নয়। তবে, ভারতে থাকা খাপলাং বাহিনীর সেনাপ্রধান নিকি সুমি ইতিমধ্যে মায়ানমারে চলে গিয়েছেন। নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল থেকে খাপলাং বাহিনীর সদস্যরাও মায়ানমার চলে যাচ্ছে বলে আসাম রাইফেল্স সূত্রে খবর। খাপলাং বাহিনীর গতিবিধির উপরে কড়া নজর রাখছে নিরাপত্তাবাহিনী।