মা সিরিয়াল কিলার? বিশ্বাস হচ্ছে না ছেলের, জলি সাইকোপ্যাথ বলেই সন্দেহ পুলিশের

পুলিশ সূত্রের খবর, জলি প্রথম খুন করেছিলেন ১৭ বছর আগে। ২০০২ সালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জলির শাশুড়ি ৫৭ বছরের আন্নাম্মা টমাস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা 

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৪
Share:
জলি সাজু

জলি সাজু

হাসিখুশি স্বভাবের এক গৃহবধূ কী ভাবে সিরিয়াল কিলার হতে পারেন— এই রহস্যভেদ করতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে কেরল পুলিশ। ২০০২ সাল থেকে স্বামী-সহ পরিবারের ছ’জনকে খুনের অভিযোগে গত শনিবার জলি সাজু নামে ওই গৃহবধূকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জেরার পর তদন্তকারী অফিসারদের সন্দেহ, জলি সাইকোপ্যাথ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, জলি প্রথম খুন করেছিলেন ১৭ বছর আগে। ২০০২ সালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জলির শাশুড়ি ৫৭ বছরের আন্নাম্মা টমাস। মনে করা হয়েছিল, সেটি স্বাভাবিক মৃত্যু। তার ছ’বছর পরে আন্নাম্মার স্বামী টম মারা যান। ২০১১ সালে মৃত্যু হয় জলির স্বামী রয় টমাসের। ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ার বিষয়টি সামনে এসেছিল। তার তিন বছর পর একই ভাবে মৃত্যু হয়েছিল আন্নাম্মার ভাই ম্যাথুর। স্বামী রয়ের মৃত্যুর পর তাঁর খুড়তুতো ভাই সাজুকে বিয়ে করেছিলেন জলি। ২০১৬ সালে সাজু-র প্রাক্তন স্ত্রী এবং দু’বছরের মেয়ে অ্যালপাইনের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগে ফের তদন্ত শুরু হলে বিষয়টি সামনে আসে।

অভিযোগের ভিত্তিতে কবর খুঁড়ে নিহতদের দেহের ফরেন্সিক পরীক্ষা করায় পুলিশ। জানা যায়, মৃত্যুর আগে প্রত্যেকেই কিছু খেয়েছিলেন এবং প্রত্যেকের শরীরে সায়ানাইডের অস্তিত্ব মেলে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আরও খুনের পরিকল্পনা ছিল জলির! কেরল সিরিয়াল কিলার রহস্যে নয়া মোড়

তদন্তকারীদের সন্দেহ, সায়ানাইড প্রয়োগে খুন করা হয়েছিল। তাঁরা জানতে পারেন, প্রতিটি খুনের সময় জলি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। দফায় দফায় জেরার পরে জলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই সিরিয়াল খুনের তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে কেরল পুলিশ। সিটের অন্যতম সদস্য কোঝিকোড় (গ্রামীণ)-এর পুলিশ সুপার কে জি সাইমন বলেন, ‘‘পরিবারের আরও দুই শিশুকে সায়ানাইড খাইয়ে খুনের পরিকল্পনা ছিল জলির। কিন্তু সুযোগের অভাবে তা করতে পারেননি।’’

গ্রেফতার করা হয়েছে জলির পরিচিত এম ম্যাথিউ এবং প্রাজু কুমারকে। পুলিশ জানতে পেরেছে, গয়না কারখানার কর্মী প্রাজু সায়ানাইড পৌঁছে দিতেন ম্যাথিউকে। তাঁর কাছ থেকে সায়ানাইড পেতেন জলি।

কেরল পুলিশের ডিজি লোকনাথ বেহরার মতে, জলির দ্বৈত সত্তা রয়েছে— তিনি গৃহবধূ পাশাপাশি, এক জন সিরিয়াল কিলারও। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘জলি হাসিখুশি স্বভাবের, ব্যবহারও স্বাভাবিক। কিন্তু যে সব প্রমাণ পেয়েছি, তা থেকে স্পষ্ট তিনি সিরিয়াল কিলার। জলির মানসিকতা বুঝতে দক্ষ মনোবিদের সহায়তা নিতে বলা হয়েছে তদন্তকারীদের।’’ জলির ছেলে ২১ বছরের রোমো রয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় তাঁর মা জড়িত তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement