কোট্টায়ামে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
বন্যাবিধ্বস্ত কেরলের ১৪টি জেলার নানা শিবিরে আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন ভিন্ রাজ্য থেকে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকেরা। তাঁদের ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য সব রাজ্য সরকারের কাছেই আবেদন জানাচ্ছে কেরলের সরকার। বাংলা থেকে যে হেতু বেশ বড় সংখ্যার শ্রমিক ওই রাজ্যে কর্মরত, তাঁদের ফেরাতে এ রাজ্যকেও তৎপর হওয়ার আর্জি জানাচ্ছে কেরল। কিন্তু বাংলার তরফে ওখানকার আশ্রয় শিবিরে যোগাযোগ করা হচ্ছে না বলেই কেরলের সরকারি ও বেসরকারি সূত্রের বক্তব্য। বাংলার সরকার অবশ্য বলছে, বাঙালি শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য তারা যা করণীয়, তা করছে।
ভিন্ রাজ্য থেকে কেরলে কর্মরত এখন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ। কেরলের সরকারি ভাষ্যে যাঁদের ‘অতিথি শ্রমিক’ বলা হয়। এঁদের মধ্যে ২০%-ই বাঙালি বলে কেরল সরকারের বক্তব্য। কেরলের শ্রমমন্ত্রী টি পি রামকৃষ্ণনের কথায়, ‘‘আমাদের শ্রম দফতরের তরফে দু’টি হেল্পলাইন খোলা হয়েছে। যাতে শ্রমিকদের খোঁজখবর নিতে বা ফেরানোর ব্যবস্থা করতে অন্য রাজ্য থেকেও কেউ যোগাযোগ করতে পারেন। এখনও পর্যন্ত ওই নম্বরে সংবাদমাধ্যমই বেশি যোগাযোগ করেছে। আবার আটকে পড়া শ্রমিকদের কেউ কেউও যোগাযোগ করেছেন।’’ বাংলা থেকে দু’জন আধিকারিক ওই হেল্পলাইনের সত্যতা যাচাই করতে ফোন করলেও পরে সরকারি তরফে আর হাত বাড়ানো হয়নি বলেই খবর। অথচ বিহার, ওড়িশার মতো রাজ্য থেকে মেডিক্যাল টিম কেরলে পৌঁছে গিয়েছে। বাংলার শ্রম দফতর নিজেরাও এখন পর্যন্ত কোনও হেল্পলাইন খোলেনি।
রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে সোমবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁরা ওখানে কাজের জন্য গিয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে রাজ্য সরকার অবহিত। রাজ্য সরকার বিষয়টা খেয়ালও রাখছে।’’ এর্নাকুলাম থেকে তিরুঅনন্তপুরম হয়ে যে শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেন এ দিন রাতে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছেছে, তাঁদের স্বাগত জানানোর জন্য হাজির ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ট্রেনে আসা শ্রমিকদের সরকারি উদ্যোগে বাসে করে নিজেদের এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হবে। চেন্নাই হয়ে নিজেদের উদ্যোগে ট্রেন ধরে আরও কিছু শ্রমিক এ দিন দুপুরেই হাওড়া পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: ছাদে ‘ধন্যবাদ’ ত্রাতাদের
কেরলে উদ্ধারকারী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের অনেকেই অবশ্য বলছেন, প্রত্যন্ত এলাকায় শিবিরে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে বাংলার সরকার যোগাযোগ করলে তাঁদের ফেরার ব্যবস্থা করতে সুবিধা হয়। বিপাকে পড়ে বেশ কিছু বাঙালি শ্রমিকও মোবাইলে ভিডিও-বার্তা রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে পাঠাচ্ছেন।