পহেলগাঁওয়ে নিহত কেরলের বাসিন্দা এন রামচন্দ্রন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
কেরলের কোচির বাসিন্দা এন রামচন্দ্রন পরিবার নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী, কন্যা এবং আট বছরের যমজ দুই নাতি। পহেলগাঁওয়ে তাদের চোখের সামনেই দাদুর মাথায় গুলি করে চলে যায় জঙ্গি। সেই তীব্র শব্দ, রক্ত, আর্তনাদ কিছুতেই ভুলতে পারছে না রামচন্দ্রন পরিবার। ভয়াবহতা এখনও তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
নিহত প্রৌঢ়ের পুত্র অরবিন্দ কাশ্মীরে ছিলেন না। ২২ তারিখ বিকেলে বোনের ফোন পান তিনি। সেখান থেকেই জানতে পারেন, তাঁর বাবা জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে অরবিন্দ বলেছেন, ‘‘আমার বাবা-মা, বোন এবং বোনের দুই ছেলে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিল ২১ এপ্রিল। ২২ তারিখ আমার বোন আমাকে ফোন করে জানায়, সেখানে জঙ্গি হামলা হয়েছে এবং আমার বাবাকে ওরা মেরে ফেলেছে। আট বছরের নাতিদের সামনেই তাদের দাদুকে মারা হয়েছে।’’
কথা বলতে বলতে গলা কেঁপে যাচ্ছিল অরবিন্দের। তিনি আরও বলেন, ‘‘ওরা সবাই ঘোড়ায় চড়ছিল। গুলির শব্দ পেয়ে ঘোড়া থেকে লাফিয়ে নামে এবং পালানোর চেষ্টা করে। হামাগুড়ি দিয়ে কোনও রকমে ওরা আড়ালে চলে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে অন্য এক জঙ্গি চলে আসে। আমার বাবাকে কলমা পড়তে বলা হয়েছিল। বাবা কিছু বুঝতে পারেনি। তখনই তাকে গুলি করে মারা হয়। মাথায় গুলি করায় ঘটনাস্থলেই বাবার প্রাণ চলে গিয়েছিল।’’
এর পরেও বাবা বেঁচে আছেন ভেবে তাঁর দেহ আঁকড়ে ছিলেন কন্যা। দাদুর দেহ আঁকড়ে মাকে চিৎকার করে কাঁদতে দেখেছিল দুই নাতি। অরবিন্দ জানান, এর পর জঙ্গলের ভিতর দিয়ে কোনও রকমে এগিয়ে একটি রিসর্টে পৌঁছোয় পরিবারটি। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা তাঁদের উদ্ধার করেন।
পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলা হয়েছে। অভিযোগ, ধর্মপরিচয় জেনে বেছে বেছে পর্যটকদের হত্যা করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা ২৬ জন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং এক জন নেপালি নাগরিক। পাকিস্তানের মদতে এই হামলা বলে অভিযোগ। যদিও পড়শি দেশ এর সঙ্গে যোগাযোগ অস্বীকার করেছে। এখনও হামলাকারীদের ধরা যায়নি।