Kerala Governor

Kerala Governor: রাজভবনে পশুখামার খুলে ফেললেন কেরলের রাজ্যপাল! রয়েছে একাধিক গরু, ১০টি ছাগল ও ২০টি মোরগ

প্রাণিবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও খামার প্রশিক্ষকদের একটি দল এখন রাজভবনের কর্মীদের হাতে-কলমে শেখাচ্ছেন, কী ভাবে গরু-ছাগল সামলাতে হবে!

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৫৯
Share:

রাজভবনের ‘পশুখামারে’ গরুকে খাওয়াচ্ছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের জেরে তিনি খবরের শিরোনামে। রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের আচরণে রুষ্ট হয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছেন। সেই ইচ্ছা সরকারি ভাবে মঞ্জুর না হলেও এখনও আচার্য হিসেবে কোনও ফাইল দেখছেন না। হাতে থাকা সময় বরং কাজে লেগে যাচ্ছে পশু-পাখিদের তদারকি করতে!

Advertisement

তিরুঅনন্তপুরমের রাজভবনে রীতিমতো পশুখামার খুলে বসেছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান! ওই খামারে এখনও পর্যন্ত ঠাঁই হয়েছে দু’টি বিরল প্রজাতির গরু, ১০টি ছাগল ও ২০টি মোরগ। রাজ্যপালের নবতম ঘোষণা, রাজভবনকে দুগ্ধ উৎপাদনে স্বনির্ভর করে তুলবেন! বাইরে থেকে আর দুধ কিনে আনতে হবে না। কেরলের সরকারি প্রাণিবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও খামার প্রশিক্ষকদের একটি দল এখন রাজভবনের কর্মীদের হাতে-কলমে শেখাচ্ছেন, কী ভাবে গরু-ছাগল সামলাতে হবে! আর সময় পেলেই বেরিয়ে এলেই চতুষ্পদ ও দ্বিপদ সকলের কাণ্ডকারখানা সরেজমিনে দেখে যাচ্ছেন রাজ্যপাল!

বাংলার প্রবীণ রাজনীতিকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এ রাজ্যে বাম জমানার গোড়ার দিকে রাজ্যপাল ত্রিভুবন নারায়ণ সিংহ রাজভবনের আরাম-বিলাসে থাকবেন না বলে রাজভবন চত্বরেই কুটির তৈরি করিয়ে ছিলেন। সেখানে ছাগলও পুষেছিলেন। রাজভবন থেকে রাজ্যপালের একটি ছাগল চুরি-কাণ্ডকে ঘিরে তোলপাড়ও হয়েছিল সে আমলে! সেই ত্রিভুবনের আদি নিবাস ছিল উত্তরপ্র্রদেশের বারাণসী। ঘটনাচক্রে, কেরলের অধুনা রাজ্যপাল এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরিফও আদতে উত্তরপ্রদেশের লোক। এক হাতে কেরলের বাম সরকারের সঙ্গে যুদ্ধ চালানোর পাশাপাশি অন্য হাতে যিনি রাজভবনের দুধ উৎপাদনের সূত্র লালন-পালন করছেন!

Advertisement

সরকারি সূ্ত্রের খবর, রাজ্যপালের ইচ্ছায় রাজভবনের খামারের জন্য দু’টি বিরল ‘বেচুর’ প্রজাতির গরু আনানো হয়েছে প্রাণিবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় মারফত। ছাগল ও মোরগের ব্যবস্থাও একই ভাবে হয়েছে। মোরগের জন্য তৈরি করানো হয়েছে আলাদা খাঁচাও। রাজ্যপালের যুক্তি, এমন ধরনের খামার চালানোর জন্য জায়গা, পরিকাঠামো-সহ কোনও কিছুরই অভাব রাজভবনে নেই। তা হলে আর বাইরে থেকে দুধ আনানো হবে কেন?

সরকারি কর্মীদের একাংশ অবশ্য বুঝতে পারছেন না, গরু ও ছাগলের সঙ্গে দুধের যোগসূত্র না হয় বোঝা গেল। কিন্তু মোরগ লাগবে কোন কাজে? তারা তো ডিমও দেবে না! তা হলে কি গলার জোরে তারা রাজ্যপালের নিদ্রাভঙ্গে সহযোগিতা করবে?

এখনও পর্যন্ত খামার চালানোর জন্য নতুন কর্মী নিয়োগের সুপারিশ করে রাজভবন থেকে কোনও ফাইল সরকারের কাছে আসেনি। তবে কিছু দিন গড়ানোর পরে তেমন চাহিদা যে মাথা চাড়া দিতে পারে, তা এখন ধরেই রেখেছে সরকারি মহল।

রাজ্যপালের নতুন খেয়াল প্রসঙ্গে কেরলের বনমন্ত্রী এ কে শশীন্দ্রনের মন্তব্য, ‘‘এক দিকে বলছেন আচার্য থাকতে চান না। আবার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেই পশু-পাখি আনাচ্ছেন! তবে যা-ই হোক, এতে উনি খুশি থাকলে ভাল। রাজভবনকে আরএসএসের খোঁয়াড় বানানোর প্রতিবাদ করছি আমরা। সেখানে পশুখামার নিরাপদ ব্যাপার!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement