কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিধানসভায় জনস্বার্থে পাশ করানো বিলগুলি আটকে দেওয়ার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল কেরল সরকার। পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সরকার এই মামলায় রাষ্ট্রপতির সচিব, রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান ও কেন্দ্রীয় সরকারকে শরিক করেছে।
কেরল সরকার তাদের আইনজীবী সি কে শশীর মারফত অভূতপূর্ব এই মামলাটি শীর্ষ আদালতে দাখিল করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, কেন্দ্র-রাজ্যের সম্পর্কের বিষয়টি জড়িয়ে নেই, এমন সাতটি বিল রাজ্যপাল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছেন। প্রায় দু’বছর ধরে রাজ্যপালের টেবিলে বিলগুলি পড়ে থাকায় বিধানসভার ভূমিকা অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। এই বিলগুলি জনস্বার্থে পাশ করানো হয়েছে বলে রাজ্য সরকারের দাবি। কেরল সরকার বলেছে, গত ২৩ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে তাদের জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি এই সাতটি বিলের মধ্যে চারটিই আটকে দিয়েছেন। বিলগুলি হল, ২০২১ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী (দুই নম্বর) বিল, ২০২২ সালে কেরল সমবায় সংশোধনী বিল, ২০২২ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী (তিন নম্বর) বিল ও বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল। কেরল সরকারের আবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি কোনও কারণ না দেখিয়ে এই বিলগুলি আটকে দিয়েছেন। ফলে সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাদের আর্জি— এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়া হোক।
রাষ্ট্রপতি কোনও বিলে সবুজ সঙ্কেত দিতে বা তাতে অসম্মতি জানাতে ঠিক কত দিন সময় নেবেন— সংবিধানে তা স্পষ্ট করে বলা নেই। এ ছাড়া, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬১-তে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল তাঁদের ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয় নিয়ে কোনও আদালতের কাছে জবাবদিহি করবেন না। তবে এর পরেও কেরল সরকার শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়ে বলেছে, রাজ্যপাল যে ভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলগুলিকে ঝুলিয়ে রাখছেন এবং তার পরে সেগুলি রাষ্ট্রপতির মতামতের জন্য পাঠাচ্ছেন, তাতে বিষয়টি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪-র বিরোধী হয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া, এর মাধ্যমে কেরলের মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারও হরণ করা হচ্ছে। কারণ, রাজ্যের মানুষের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে বিধানসভা বিলগুলি পাশ করিয়েছিল। বিল আটকে যাওয়ায় মানুষ সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে গোটা বিষয়টি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এর বিরোধী।