প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। —ফাইল ছবি।
ওয়েনাড়ে এসে রাহুল গান্ধীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে তাদের প্রবল অসন্তোষ ছিল দু’বারই। এ বার দাদা রাহুল ওয়েনাড় লোকসভা আসন ছেড়ে দেওয়ার পরে বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে কংগ্রেস প্রার্থী করলে তাঁর বিরুদ্ধেও লড়তে চায় কেরলের সিপিআই। তাদের যুক্তি, বামেরা ময়দান থেকে সরে দাঁড়ালে ভোটে ফায়দা পেয়ে যাবে বিজেপি। দক্ষিণী এই রাজ্যে বিজেপি যখন জমি তৈরি করছে, সেই সময়ে তাদের ‘সহায়ক পরিস্থিতি’ তৈরি করে লাভ কী? সিপিআইয়ের আরও প্রশ্ন, কংগ্রেস নেতৃত্বের খামখেয়ালের মূল্য ওয়েনাড়ের মানুষকে কেন দিতে হবে?
সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে একসঙ্গে আছে কংগ্রেস, সিপিএম ও সিপিআই। কিন্তু কেরলে কংগ্রেসের মূল লড়াই বামেদের সঙ্গেই। সেই কারণে হিন্দি বলয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না নেমে রাহুল কেন ওয়েনাড়ের মতো কেন্দ্র বেছে নিচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন সিপিএম এবং সিপিআই নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ওয়েনাড়ে ভোট হয়ে যাওয়ার পরে রাহুলের রায়বরেলী থেকেও প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেছিল কংগ্রেস। এখন আবার রাহুল জানিয়ে দিয়েছেন, ওয়েনাড় ছেড়ে দিয়ে তিনি রায়বরেলীর সাংসদ থাকবেন! সিপিআইয়ের কেরল রাজ্য সম্পাদক বিনয় বিশ্বমের বক্তব্য, ‘‘আমাদের তথা ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের মূল লড়াই অবশ্যই বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের একটা সুষ্ঠু রাজনৈতিক অবস্থান থাকবে না? রাহুল গান্ধীকে জড়িয়ে তাঁরা একটা নাটক করলেন! ওয়েনাড়ের সঙ্গে প্রতারণা করা হল। আবার একটা উপনির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হল!’’
লোকসভা ভোটের আগে ‘ইন্ডিয়া’র অন্যান্য শরিকের সঙ্গে বাম নেতৃত্বও চেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা প্রার্থী হোন। এখন প্রিয়ঙ্কা শেষ পর্যন্ত ওয়েনাড় থেকে দাঁড়ালে বামেরা তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না, এমন জল্পনা তৈরি হয়েছে কিছু মহলে। কিন্তু সিপিআইয়ের কেরল রাজ্য সম্পাদকের যুক্তি পৃথক। বিশ্বমের মতে, ‘‘উপনির্বাচন তো আমরা চাইনি। পরিস্থিতি সে দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, আমাদের প্রার্থী দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু ভোট হলে আমাদের প্রার্থী থাকবে না? বাম প্রার্থী না থাকলে কংগ্রেস-বিরোধী ভোটের বড় অংশ বিজেপিতে চলে যাবে। বিজেপির সুবিধা করে দিয়ে কী লাভ?’’ সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে ওয়েনাড়ে রাহুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে সিপিআইয়ের অ্যানি রাজা পেয়েছিলেন দু’লক্ষ ৮৩ হাজার ২৩ ভোট। রাজ্য সিপিআইয়ের যুক্তি, প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে যদি তাদের ভোট লাখখানেকও কমে যায়, তা হলেও একটা বড় অংশের ভোট থাকে, যা বিজেপির দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। বিশ্বম বলেছেন, ‘‘কে প্রার্থী হবেন, সেটা দলে আলোচনা করে ঠিক হবে। কিন্তু ভোটের ময়দানে লড়াই করতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ওয়েনাড়ে রাহুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী পি পি সুনীরকে এ বার রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে সিপিআই।