গুলাম নবি।
নিয়ন্ত্রণরেখার গা ঘেঁষে তাঁর গ্রাম, আমরোহি। ও-পারে পাক অধিকৃত কাশ্মীর। কুপওয়ারা জেলার তাঙ্গধার সীমান্তের এই গ্রামে গোলাগুলির শব্দ লেগেই থাকে। যদিও মোবাইল ফোনের রিংটোন শোনা যায় না এখনও। পরিষেবাই পৌঁছয়নি।
প্রস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসায় নয়া পথ বাতলে দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন এই গ্রামেরই ছেলে গুলাম নবি। তিনি অবশ্য এখন স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা। স্ত্রী আসিফা বেগমও দুই ছেলেকে নিয়ে সেখানেই থাকেন। শ্রীনগরের শ্রীপ্রতাপ উচ্চবিদ্যালয় থেকে বারো ক্লাস পাশ করে ১৯৮৮ সালে শ্রীনগরের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন নবি। এমবিবিএস শেষ করে ’৯৩ সালে দিল্লি এইমসে যোগ দেন। ২০০২ সালে এফআরসিএস পাশ করে পাড়ি দেন এডিনবরার ‘রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস’।
ঠিক কী করেছেন এই কাশ্মীরি চিকিৎসক? নবি নিজেই জানাচ্ছেন বিষয়টা— ভারতে পুরুষদের মধ্যে ফুসফুস ও মুখের ক্যানসারের পরে তৃতীয় ধাপে রয়েছে প্রস্টেট ক্যানসার। আক্রান্তের সংখ্যাটাও ব্যাপক হারে বাড়ছে। এ দেশে ক্যানসার আক্রান্তের মধ্যে ৭ শতাংশই প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছেন। অথচ এই ক্যানসার এত নিশ্চুপে বাড়ে যে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় ঠিক সময়ে ধরাই পড়ে না। কিন্তু ধরা পড়লে রোগীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই।
রোগ ধরতে প্রচলিত পদ্ধতি সামান্যই, ডিজিটাল রেক্টাল পরীক্ষা ও প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন (পিএসএ) রক্তপরীক্ষা করে দেখা। একটি নতুন আলট্রাসাউন্ড পদ্ধতি এনেছেন স্কটল্যান্ডের ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জিকাল ইউরো-অঙ্কোলজি বিভাগের অধ্যাপক নবি। তাঁর দাবি, ‘‘প্রস্টেট ক্যানসার নির্ধারণের জন্য এই নতুন পদ্ধতিতে অনেক নিখুঁত ভাবে রোগ ধরা পড়বে। তা ছাড়া খরচও প্রচলিত পদ্ধতির থেকে অনেকটাই কম।’’