জামিয়ার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ এ বার ছায়া ফেলল নিষেধাজ্ঞার কাশ্মীরেও। ছবি: পিটিআই।
নাগরিকত্ব আইনের দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিক্ষোভ এ বার ছায়া ফেলল নিষেধাজ্ঞার কাশ্মীরেও। এ দিন শ্রীনগরে নাগরিকত্ব আইন ও দিল্লির পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে পথে নামলেন পড়ুয়ারা। সেই বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিতে আহত হলেন দুই সাংবাদিক।
আজ সকালে শ্রীনগরের হাওয়াল এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হন স্থানীয় ইসলামিয়া কলেজের পড়ুয়ারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়েন তাঁরা। ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রীনগরে এখনও ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ থামিয়ে চলে যেতে বলেন পুলিশ অফিসারেরা। কিন্তু সে কথা মানতে রাজি হননি পড়ুয়ারা। ফলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হন আজ়ান জাভেদ ও আনিস জ়ারগার নামে দুই সাংবাদিক। সাংবাদিকদের দাবি, ওই দু’জন পরিচয়পত্র দেখানো সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের মারধর করে।
আজ দেশের অন্যান্য প্রান্তেও জামিয়ার পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে পথে নামেন পড়ুয়া ও বাসিন্দারা। আজ সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের খড়্গপুর আইআইটির পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসের বাইরে পুরীগেট এলাকায় জমায়েত করেন। মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্ল্যাকার্ড হাতে শুরু হয় প্রতিবাদ। মৌনী প্রতিবাদে সামিল হন অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের একাংশও। ছাত্র নিগ্রহের প্রতিবাদের পাশাপাশি নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও সরব হন তাঁরা। আইআইটি-র পদার্থবিদ্যার গবেষক ছাত্রী রেবেকা সরকারের কথায়, “পড়ুয়াদের উপরে এই পুলিশি অত্যাচার আমাদের লজ্জা। স্বাভাবিক ভাবে জামিয়া ও আলিগড়ের ওই পড়ুয়াদের প্রতিবাদকে আমরা সমর্থন করছি।”
আরও পড়ুন: মমতার দাবিতেই কোবিন্দকে কড়া চিঠি
আইআইটি-র রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে তো কিছু হয়নি। ক্যাম্পাসের বাইরে কিছু চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে বাইরের অনেকে আসেন। তাঁরা হয়তো কোনও বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আর সেটা দেখে হয়তো আমাদের পড়ুয়ারা ভিড় করেছে, দু’একটি কথা বলেছে। এর বেশি কিছু হয়নি।”
চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কাল থেকেই নাগরিকত্ব আইন ও জামিয়া কাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। আজ সন্ধ্যায় পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন তাঁরা। তখনই ক্যাম্পাসে ঢোকে পুলিশ। ফলে বিক্ষোভ কর্মসূচি ব্যাহত হয়। ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশের মউ জেলার দক্ষিণতোলা এলাকায় ১৫টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে গুলি ছুড়তে হয় পুলিশকে।
নাগরিকত্ব আইন ও জামিয়া কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভ হয়েছে ভোপাল, হায়দরাবাদ ও পুণেতেও। পুণের ফার্গুসন কলেজের বাইরে এনআরসি-র বদলে রোজগার চেয়ে স্লোগান দেন পড়ুয়াদের একাংশ। তবে কলেজের সামনে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের অনুমতি দেয়নি পুলিশ।